সাহিত্য

জনির পর্যটক বন্ধুদের চোখে বাংলাদেশ

১৮টি গল্প, ১১৬টি ছবি— সবই বাংলাদেশকে নিয়ে। লিখেছেন ও ছবি তুলেছেন এ দেশ ভ্রমণ করে মুগ্ধ ভিনদেশি পর্যটকরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতার সেই সংকলন নিয়েই প্রকাশিত হয়েছে ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি এ কে এম শহীদুল ইসলাম জনির ‘বাংলাদেশ ৫০ থ্রু দ্য লেন্স অব আওয়ার গ্লোবাল ফ্রেন্ডস’ (বাংলাদেশ ৫০: আন্তর্জাতিক বন্ধুদের চোখে বাংলাদেশ)।

Advertisement

জনির এ প্রয়াস পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশকে সারাবিশ্বে ব্র্যান্ডিং করার জন্য। একসময় ট্যুর গাইড হিসেবে তিনি বিদেশি পর্যটকদের সঙ্গে সারা বাংলাদেশে ভ্রমণ করেছেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি ও দেশের মানুষ সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পারেন তিনি। যা দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। দেশের মানুষ যে খুবই সহজ, সরল ও অতিথিপরায়ণ, ভ্রমণের মাধ্যমেই তিনি তা গভীরভাবে জানতে পারেন। দেশের মানুষ ও বিদেশি বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যই তার এ বই।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিদেশে বসে কিছু করার প্রয়াস থেকেই তিনি এ বই প্রকাশ করেছেন। রোববার (১২ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের (বিটিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জাবেদ আহমেদ।

প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব নির্ঝর অধিকারীসহ বইটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। বইটিতে বাংলাদেশ সম্পর্কে অনুভূতি প্রকাশ করা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বইটির ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং জনির এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।

Advertisement

এ কে এম শহীদুল ইসলাম জনির গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায়। মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে তার জন্ম। সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স করেছেন। পড়ালেখার পাশাপাশি শহীদুল ইসলাম ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ট্যুর গাইড হিসেবে কাজ করেন। পরে উচ্চশিক্ষার জন্য জার্মানি ও মিশর যান।

জার্মানির ব্রানডেন বার্গ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি ইন কটবোস ও মিশরের হেলওয়ান ইউনিভার্সিটি ইন কাইরো থেকে হেরিটেজ কনভারসেশন অ্যান্ড সাইট ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করেছেন।

শহীদুল ইসলাম জনি বলেন, ২০১০ থেকে ২০১৪ সালে যেসব পর্যটক বাংলাদেশের আতিথেয়তা গ্রহণ করেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে তারা বাংলাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছেন এ বইয়ের মাধ্যমে। এখানে ১৩টি দেশের ১৮ জন লেখক বাংলাদেশকে নিয়ে লিখেছেন। বইটিতে বাংলাদেশের মানুষের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। দেশের গ্রাম-বাংলার সাধারণ মানুষের জীবন কাহিনি গল্প ও ছবির মাধ্যমে ফুটে এসেছে।

জনি বলেন, সংকলক হিসেবে আমি একটি ভূমিকা লিখেছি, যেখানে গ্রামের একজন সাধারণ ছেলে হিসেবে বেড়ে উঠা, এরপর ভ্রমণের মাধ্যমে দেশকে জানার বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বইটি তিনটি ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে পরিচয় করানো, বিদেশি পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরা। এর বাইরে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা দেবে বইটি, যা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণেও ভূমিকা রাখবে।

Advertisement

বইটি অ্যামাজন কিনডল ডিরেক্ট পাবলিশিং প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত হয়েছে জানিয়ে জনি বলেন, রোববার থেকে বইটি সারা পৃথিবীতে পাওয়া যাবে। সারা পৃথিবীর মানুষ অনলাইন থেকে এ বইটি কিনতে পারবেন।

বইটিতে লিখেছেন অস্ট্রেলিয়ার জোনস মাতুস, যুক্তরাজ্যের ম্যাতিউ পেগলার, ফ্রান্সের সানড্রো লাকারবোনা, ফ্রান্সের সোফি নিকলট, জার্মানির ড. আনড্রেয়াস মেইসনার ও ক্রিসছিয়ান কেমপারডিক, আয়ারল্যান্ডের টম ওয়েনস ও ডেভিড লেগান, ইতালির লাওরা রুইসি, নেদারল্যান্ডসের গারবেন ডি জং ও আনড্রেয়ানা ডি জং, নিউজিল্যান্ডের ক্লেয়র ম্যাক ক্লিনটক ও ইয়ান ওয়ার্ড, সিঙ্গাপুরের চান কাহ টিম, সুইডেনের কাতারিনা ডাগেনফলট ও ক্রিসচিনা লিজা, সুইজারল্যান্ডের স্টেফান মারতি ও সুসান মারতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ড. হেইডি মা।

এইচএস/এআরএ/জেআইএম