যে তিনটি ইবাদতের জন্য পবিত্রতা অর্জন করা ফরজ, তন্মধ্যে নামাজ একটি। পবিত্রতা প্রসঙ্গে হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ ইবনে মাজাহ ও তিরমিজিতে এসেছে-
Advertisement
‘পবিত্রতা নামাজের চাবি। তাকবির নামাজের বাইরে সব হালাল কাজ হারামকারী। আর সালাম ফেরানো তার নামাজের বাইরের সব হালাল কাজ হালালকারী।’
নামাজের জন্য শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক পবিত্রতা খুবই জরুরি। প্রশান্ত হৃদয়ে সুন্দর পরিবেশে উত্তম অবয়বে নামাজ পড়ার মর্যাদাও অনেক বেশি। বিশেষ করে জুমার দিন নামাজের জন্য পবিত্রতার উদ্দেশ্যে অজু, গোসল, সুগন্ধি ও উত্তম পোশাক পরাসহ মেসওয়াক ও তৈল ব্যবহার করার প্রতি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি। জুমার নামাজে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-
১. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা বলেছেন, ‘লোকজন তাদের বাড়ি-ঘর থেকে এবং মদিনার উপকণ্ঠ থেকে জুমার নামাজ আদায় করতে আসতো। তারা আবা (এক প্রকার ঢিলা পোশাক) পরে আসতো এবং তাতে ময়লা লেগে যেতো। এতে তাদের শরীর থেকে নিৰ্গত ঘামের দুর্গন্ধ ছড়াতো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা যদি তোমাদের দিনটিতে অধিক পবিত্রতা অর্জন করতে, তোমরা যদি এ দিনে পবিত্রতা অর্জন করতে! (মুসলিম)
Advertisement
২. হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জুমার দিন গোসল করা অপরিহার্য।’ (মুসলিম)
৩. হজরত আবু সাঈদ আল-খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমুআর দিন প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির গোসল ও মেসওয়াক করা কর্তব্য এবং সামর্থ্য থাকলে সে যেন সুগন্ধি ব্যবহার করে। এবং সুগন্ধির ব্যাপারে অন্য বর্ণনায় আছে- ‘এমনকি স্ত্রীর সুগন্ধি থেকে হলেও।’ (মুসলিম)
৪. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ‘প্রত্যেক মুসলিমের ওপর আল্লাহর অধিকার এই যে, সে প্রতি সাতদিন অন্তর গোসল করবে, মাথা ও দেহ ধুয়ে নেবে।’ (মুসলিম)
৫. হজরত আবূ হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন জানাবাতের (ফরজ গোসল) গোসলের মতো গোসল করলো, এরপর দিনের প্রথমভাগে মসজিদে এলো, সে যেন একটি উট কুরবানি করলো। এরপর যে ব্যক্তি এলো সে যেন একটি গরু কুরবানি করলো, এরপর যে ব্যক্তি এলো সে যেন একটি ভেড়া কুরবানি করলো, এরপর যে ব্যক্তি এলো সে যেন একটি মুরগী কুরবানি করলো, এরপর যে ব্যক্তি এলো সে যেন একটি ডিম কুরবানি করলো। তারপর ইমাম যখন খুতবাহ দিতে (দাঁড়ালেন) তখন মালাকগণ খুতবাহ শোনার জন্য উপস্থিত হন।’ (মুসলিম)
Advertisement
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জুমার দিন শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক প্রশান্তি পেতে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার জন্য অজু গোসল করা, মেসওয়াক করা, সুগন্ধি ও তেল ব্যবহার করা। নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে আগেভাগে মসজিদে গিয়ে কুরবানির সাওয়াব পাওয়ার চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিন পবিত্র অর্জন করার তাওফিক দান করুন। শারীরিক মানসিক ও আত্মিক পচ্ছিন্নতা অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস