আন্তর্জাতিক

চীনের কারণে আরও এক বন্ধু হারালো তাইওয়ান

চীনের কারণে আরও একটি বন্ধু হারালো তাইওয়ান। বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠ হতে তাইপেইয়ের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়া। এ নিয়ে গত পাঁচ বছরে অন্তত সাতটি দেশের সমর্থন হারালো তাইওয়ান। খবর বিবিসির।

Advertisement

নিকাগুয়ানদের এমন সিদ্ধান্তের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে চীন। বেইজিংয়ের দাবি, তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক চাইলে কোনো দেশকে অবশ্যই তাইপেইয়ের সঙ্গে বিদ্যমান বন্ধন ছিন্ন করতে হবে।

তবে নিকারাগুয়ার ঘোষণায় ‘গভীর দুঃখ’ প্রকাশ করেছে তাইওয়ান। তারা বলেছে, এর মাধ্যমে দেশটি বহু বছরের পুরোনো বন্ধুত্বকে অপমান করেছে।

চীন বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ মনে করে। দ্বীপটি চীনা মূলভূমির সঙ্গে কোনো একদিন এক হবে, এমন আশায় বুক বেঁধে রয়েছে তারা। তবে তাইওয়ান নিজেদের স্বধীন গণতান্ত্রিক দেশ বলে দাবি করে। যদিও তারা কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়নি।

Advertisement

২০১৬ সালের মে মাসে প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন তাইপেইয়ের ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত তাইওয়ানের মিত্রের সংখ্যা ২১ থেকে নেমে ১৪টিতে দাঁড়িয়েছে।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে নিকারাগুয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, তারা ‘এক চীন’ নীতির সমর্থনে তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে এবং সব ধরনের যোগাযোগ বা অফিসিয়াল সম্পর্ক বন্ধ করে দিয়েছে।

https://twitter.com/SpokespersonCHN/status/1469129189986955266

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং নিকারাগুয়ার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, বৈশ্বিক ট্রেন্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে এটিই সঠিক সিদ্ধান্ত এবং এতে জনগণের সমর্থন রয়েছে।

Advertisement

তবে এর তীব্র সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, এতে নিকাগুয়ান জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। কারণ সেখানকার সরকার স্বাধীনভাবে নির্বাচিত নয়।

নিকারাগুয়ার নির্বাচনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কিছু পর্যবেক্ষক। নির্বাচনের আগে দেশটিতে প্রেসিডেন্টের বেশ কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে আটক করা হয়েছিল।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন থেকে আসা ম্যান্ডেট ছাড়া নিকারাগুয়ান প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগার কর্মকাণ্ড দেশটির জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করতে পারে না। ‘যেসব দেশ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে মূল্য দেয়’ তাদের তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, অন্য দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিনিময় ও বিকাশের অধিকার রয়েছে তাদের এবং তারা ‘বাস্তবধর্মী কূটনীতির’ প্রচার অব্যাহত রাখবে।

নিকারাগুয়ার আগে সবশেষ ২০১৯ সালে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র কিরিবাতি ও সলোমন দ্বীপপুঞ্জ চীনের কারণে তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেছিল। এছাড়া, গত নভেম্বরে লিথুনিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে দেয় চীন। কারণ, বাল্টিক ইউরোপের দেশটি তাইওয়ানকে স্বতন্ত্র দূতাবাস খোলার অনুমতি দিয়েছিল।

কেএএ/জিকেএস