স্বাস্থ্য

সিসিটিভির নজরদারিতে বারডেম হাসপাতাল

দুই শতাধিক ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার গোয়েন্দা নজরদারিতে বারডেম হাসপাতালের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক সফলতা এসেছে বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দুই এক বছর আগেও হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির নানা অভিযোগ থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে কার্যকর ব্যবস্থা ছিল না।  অনুসন্ধানে জানা গেছে বিভিন্ন অভিযোগসমূহের মধ্যে ছিল রোগীদের মোবাইল, নগদ টাকা ও পোশাক পরিচ্ছেদ চুরি, হাসপাতালের এক শ্রেণির অসৎ কর্মকর্তাকর্মচারীর নানা অজুহাতে রোগীদের কাছ থেকে নগদ টাকা পয়সা আদায়, ওষুধ কোম্পানির মার্কেটিং রিপ্রেজেনটেটিভদের যখন তখন হাসপাতালে প্রবেশ করে চিকিৎসার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করা, ভুল চিকিৎসার অভিযোগে রোগীর স্বজনদের হাসপাতাল ভাংচুর, ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ডিটটিতে ফাঁকি। বারডেম হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শহিদুল হক মল্লিক জাগো নিউজকে জানান, ৫শ’৭৬ বেডের শাহবাগের বারডেম হাসপাতাল-১ ও ১২২ বেডের সেগুনবাগিচার বারডেম-২ হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ২ হাজার ৭শ’ জন। দুটি হাসপাতালে প্রতিদিন আউটডোরে পাঁচ সহস্রাধিক  ও ইনডোরে শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ বেডে রোগী ভর্তি  থাকেন। হাসপাতালের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবাকে কেন্দ্র করে বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হয়। হাসপাতাল স্টাফ ও হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে বারডেম-১ হাসপাতালে ১শ’৮৭টি ও বারডেম-২ হাসপাতালে ৪৮টিসহ মোট ২৩৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। সিসিটিভিগুলো গোয়েন্দাদের মতো প্রতিমুহূর্তের তথ্য জানান দিচ্ছে মন্তব্য করে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, সিসিটিভির মাধ্যমে হাসপাতাল এলাকায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতির সার্বিক নিয়ন্ত্রণ, হাসপাতালের চিকিৎসাসেবাসহ সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং ও সুপারভিশন জোরদার ও হাসপাতালে আগত রোগী ও অন্যান্যদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষনিক নজর রাখা সম্ভব হয়। ১৫ তলা বিশিষ্ট বারডেম হাসপাতাল-১ এর প্রতিটি ফ্লোর ও ৭ তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল-২ এর ৫টি ফ্লোর থেকে সিসিটিভির মাধ্যমে কার্যক্রম মনিটরিং করা হচ্ছে। হাসপাতালের পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ), যুগ্ম পরিচালক (প্রশাসন), উপ-পরিচালক (হাসপাতাল), পরিচালক (ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস), চিফ সায়েন্টিফিক অফিসারসহ একাধিক কক্ষ থেকে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে সকলের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা  সম্ভব হয়। পুলিশসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীরাও বিভিন্ন তদন্তে তাদের কাছ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির যুগ্ম-মহাসচিব ও বিএমএর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ ই মাহবুব সিসিটিভি এর মাধ্যমে সার্বিক অনিয়ম দূর করা এখনও সম্ভব হয়নি মন্তব্য করে বলেন, হাসপাতালের সার্বিক আর্থিক লেনদেন কম্পিউটারাইজড না করা পর্যন্ত সম্পূর্নভাবে আর্থিক দুর্নীতিরোধ করা সম্ভব হবে না। তবে সিসিটিভির মাধ্যমে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সঠিকভাবে দায়িত্বপালন করছে কি না তা অনেকটা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি জানান। এমইউ/এআরএস/আরআইপি

Advertisement