ফরিদপুরের সদরপুরে এক যুবকের বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলচাপায় শেখ হাবিবুর রহমান নামে এক বৃদ্ধের পা ভেঙে যায়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে ভাঙা পা নিয়ে বাড়ির বিছানায় পড়ে আছেন তিনি।
Advertisement
এ ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। তবে ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে উল্টো ওই বৃদ্ধার ভাগিনা ও ভাতিজার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের মামলা করে অভিযুক্ত যুবকের পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের মেছেরেরডাঙ্গী গ্রামে ২৭ অক্টোবর রাতে বৃদ্ধ হাবিবুর রহমান বাড়ি সংলগ্ন মসজিদের ওজুখানা থেকে হাতমুখ ধুয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় একই গ্রামের নাজিমুদ্দিন সরদারের ছেলে নাহিদ সরদার (১৯) তার মোটরসাইকেল বেপরোয়া গতিতে চালানোর সময় বৃদ্ধকে চাপা দেন। এতে তার বা পায়ের হাড় ভেঙে যায় এবং হাতেও মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন।
আহত অবস্থায় তাকে সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে পাঠান। নিঃসন্তান হাবিবুর রহমান একজন অসহায়। চিকিৎসার টাকার অভাবে তার ভাই-ভাতিজারা সেখান থেকে বাড়ি এনে চিকিৎসা করাচ্ছেন।
Advertisement
এদিকে, ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে আপসের চেষ্টা চালায় মোটরসাইকেল চাপা দেওয়া যুবক নাহিদ সরদার ও তার বাবা নাজিমদ্দিন সরদার এবং তাদের স্বজনরা। কিন্তু এতে তারা ব্যর্থ হন।
এ ঘটনায় হাবিবুর রহমানের ভাগনে মোশারফ হোসেন বাবুল ২৩ নভেম্বর সদরপুর থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলা ও বৃদ্ধকে চাপা দেওয়ার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নাহিদ সরদারের বাবা নাজিমদ্দিন সরদার বাদী হয়ে ফরিদপুর ম্যাজিস্ট্রেট ২ নম্বর আমলি আদালতে পাল্টা একটি ছিনতাই মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সদরপুর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদন জন্য আদেশ দেন।
হাবিবুর রহমানের ছোট ভাই শেখ আ. হাই জাগো নিউজকে বলেন, নাহিদ সরদার মোটরসাইকেলে চাপা দিয়ে আমার ভাইকে গুরুতর আহত করে। ঘটনাটি এলাকাবাসী জানে। মামলার বাদী আহত হাবিবুর রহমানের ভাগনে বাবুল বলেন, গাড়ি চাপায় আমার মামা হাবিবুর রহমান গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে বিছানায়। তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর না নিয়ে উল্টো ঘটনা মীমাংসার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে আমাদের চাপ সৃষ্টি করছে। আমাদের নামে আদালতে মিথ্যা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে একটি মামলাও করেছে। এতে আমিসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
ছিনতাই মামলার বাদী ও অভিযুক্ত নাহিদের বাবা নাজিমদ্দিন সরদার বলেন, দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। তা কী মীমাংসা করা যাবে না। আমরাও আমাদের আত্মীয়স্বজন মিলে মীমাংসার জন্য চেষ্টা চালিয়েছি। মীমাংসা না হওয়ায় মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।
Advertisement
এ বিষয়ে সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসরাফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনার ঘটনাটি সঠিক। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলমান আছে।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার জাগো নিউজকে বলেন, বৃদ্ধ হাবিবুর রহমানের মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার বিষয়টি সত্য। এ নিয়ে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে একটি ছিনতাই মামলার কথা শুনেছি। মামলার কাগজ এখনো থানায় আসেনি। মামলার কাগজ হাতে পেলে বলতে পারবো।
এন কে বি নয়ন/এসজে/এএসএম