দেশজুড়ে

সোনারচরে হচ্ছে বিশেষ পর্যটন এলাকা

বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা দ্বীপ সোনারচর। সবুজের সমারোহে চারদিক ছেয়ে আছে প্রকৃতি। বনবিভাগের সংরক্ষিত এ বনাঞ্চলে আছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালাসহ পশু পাখিদের অভয়াশ্রম। বনের পাশেই আছে বালুকাময় সমুদ্র সৈকত। পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় এ দ্বীপকে কাজে লাগাতে চায় সরকার।

Advertisement

শুধু সোনারচর নয়, এর আশপাশে থাকা আরও তিনটি চর নিয়ে বিশেষ পর্যটন এলাকা গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইকো ট্যুরিজমকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সোনার চরে আছে কেওড়া, সুন্দরী, ছৌলা, করমচা, হেতাল, বাবলা, নোনাঝাউ, গোলপাতাসহ অসংখ্য প্রজাতির গাছপালা। গাছ-গাছালির মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ছোট বড় খাল। সব মিলিয়ে প্রকৃতির এক অপরূপ সৃষ্টি। এক দেখাতেই সবাইকে মুগ্ধ করবে এ চার। নামের সঙ্গে যার বাস্তবতা শতভাগ মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

এ চরে আছে চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, শুকর, বন বিড়াল, গুইসাপ, চামচিকাসহ বিভিন্ন বিলুপ্তপ্রায় এবং বিরল সব প্রাণীর উপস্থিতি। আর সোনার চরেই আছে দেশি-বিদেশি জানা অজানা পাখিদের অভয়ারণ্য।

Advertisement

২০২৬.৪৮ হেক্টর আয়তনের এ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের উত্তর এবং পশ্চিমে বুড়া গৌরাঙ্গ নদী এবং দক্ষিণ ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর। আর দক্ষিণ পূর্ব দিকে আছে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, সোনারচরের পাশেই আছে চরকলাগাছিয়া, চরতুফানিয়া এবং জাহাজমারার চর। এগুলোকে কীভাবে একটি সমৃদ্ধ পর্যটনের আওতায় নিয়ে আশা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে সোনারচরের পূর্বদিকের সৈকত লাগোয়া এলাকার বেশকিছু গাছ মারা গেছে। ফলে এখানে আগত পর্যটকরা হতাশা প্রকাশ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জাগো নিউজকে বলেন, ইট কটি ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ও সৈকত লাগোয়া গাছের গোঁড়ায় অধিক পরিমাণ বালু জমায় গাছগুলো মারা গেছে। তবে সোনারচরের পূর্বদিকে জেগে ওঠা নতুন চরে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সৃজন করার পাশাপাশি এখানে সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে জানতে বিশেষ একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।

Advertisement

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সোনারচরসহ এর আশপাশের দ্বীপ চর নিয়ে বিশেষ পর্যটন এলাকা ঘোষণার জন্য বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সোনারচরসহ এ এলাকার দ্বীপ চরগুলো পর্যটন স্পট হিসেবে পরিণত হলে কুয়াকাটাও অনেকটা সমৃদ্ধ হবে। এ জন্য রাঙ্গাবালী উপজেলার সঙ্গে ফেরি সার্ভিসও চালু করা হবে।

২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সোনারচরকে একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে এ চরে কোন মানুষের বসতি না থকলেও বনের নিরাপত্তার জন্য বন বিভাগের একটি অফিস আছে।

আব্দুস সালাম আরিফ/এসজে/এমএস