খেলাধুলা

বৃষ্টির সাহায্য ছাড়া ম্যাচ বাঁচাতে পারবে মুমিনুলের দল?

প্রথম দিনটি ভালোয় ভালোয় কেটেছিল। দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু বৃষ্টির উপদ্রব। রোববার ৩৮ বল হয়ে খেলা বন্ধ। তারপর সোমবার একটি বলও মাঠে গড়ায়নি।

Advertisement

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে আজ আবার বেলা ১১ টা (১০টা ৫০মিনিটে) শুরু হয়েছে খেলা। মাঝখানে বৃষ্টির তোড়ে ধুয়ে গেছে প্রায় আড়াই দিন। ৫ দিনের ম্যাচের অর্ধেক ধুয়েমুছে গেছে। এ খেলার আর আছে কিছু? নিশ্চয়ই নিষ্প্রাণ ড্র হবে ঢাকা টেস্ট!

বাংলাদেশ ভক্ত-সমর্থকদের একটা বড় অংশ তা ধরে ও ভেবেই কম্বল মুড়ি দিয়ে আয়েশ করে টিভিতে খেলা দেখতে বসেছিলেন। তারা হয়ত স্বপ্নেও ভাবেননি। এ মরা টেস্টে হঠাৎ প্রাণের সঞ্চার ঘটতে পারে।

কিন্তু বাস্তবে হয়েছে তাই। এগুলো এখন অতীত ইতিহাস। আসল খবর হচ্ছে পাকিস্তানের ৪ উইকেটে তোলা ৩০৪ রানের পিছু ধেয়ে ধুঁকছে বাংলাদেশ। ভাবছেন তাতে কী? নাহ! তাতে কী বললে চলবে না। বাংলাদেশ এখন গভীর সংকটে। ম্যাচ বাঁচাতে রীতিমত সংগ্রাম করতে হবে।

Advertisement

প্রথম কাজ হবে ফলোঅন এড়ানো। পাকিস্তানকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামাতে হলে প্রথম করণীয় কাজ ছিল ১০৫ রান করা। সে পথে হেঁটে এখন চতুর্থ দিন শেষে স্কোর ৭ উইকেটে ৭৬ রান। তারমানে ফলোঅন এড়াতে সবার আগে করতে হবে আরও ২৯ রান।

সে কাজটি করতে গিয়ে মুমিনুল হকের দল যেভাবে ব্যাট চালালেন, তা দেখে অতিবড় ভক্ত, অন্ধ সমর্থকও চরম হতাশ। পাশাপাশি বিস্মিত! ম্যাচের আর ৪টি সেশন বাকি। এর মধ্যে ২০ উইকেট হারানো কঠিন। নিজেরা উইকেট বিসর্জন না দিলে হয়ত সম্ভবও না।

তাই ধারনা ছিল সাদমান, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, অধিনায়ক মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান আর মেহেদি হাসান মিরাজরা দেখেশুনে ধীরে-সুস্থে বলের মেধা ও গুনাগুণ বিচার করে খেলবেন।

কিন্তু তারা এর ধারে কাছে দিয়েও গেলেন না। সাদমান ইসলাম ছাড়া অভিষেক হওয়া মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, অধিনায়ক মুমিনুল হক, অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ সবাই মারতে গেলেন। এমন মার সীমিত ওভারের খেলায়ও দেখা যায় খুব কম।

Advertisement

দেখে মনে হলো সামনে রানের খুব তাড়া। না হয় ম্যাচ শেষ। সুতরাং, এখন হাত খুলে তেড়েফুড়ে না মারলেই নয়। আর তাতেই ভয়াবহ বিপর্যয়। ফলোঅন এড়াতে করতে হবে আরও ২৯ রান। হাতে উইকেট মোটে ৩টি। ব্যাটিং জানাদের মধ্যে উইকেটে আছেন কেবল সাকিব আল হাসান (২৩)। সঙ্গে তার বাঁ-হাতি স্পিনিং পার্টনার তাইজুল (০) ইসলাম।

এখন বুধবার শেষদিন যথাসময়ে খেলা হলে সবার আগে সাকিব ও তাইজুল এবং এবাদত আর খালেদকে মিলে ওই ২৯ রান করতে হবে। তা না করতে পারলে আবারও ব্যাটিংয়ে নামতে হবে এবং তখন পুরো দুই সেশনের বেশি সময় উইকেটে টিকে থাকতে হবে।

আজ এক সেশনই ক্রিজে কাটানো সম্ভব হয়নি। কাল শেষ দিনের উইকেটে কী ৪ ঘণ্টার বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে মুমিনুলের দল? সংশয়। সন্দেহ। শঙ্কা- সবই গ্রাস করছে। সত্যি কথা বলতে, আজ বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বলগাহীন ব্যাট চালনা দেখে অতিবড় সমর্থকও আশাবাদী হতে পারছেন না।

তাদের সবার কথা, এখন খেলা যতটা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের হাতে, তার চেয়ে বেশি বৃষ্টি তথা প্রকৃতির হাতে। কাল বুধবার যদি বৃষ্টি কেটে সুর্য্য ওঠে। খেলা নির্ধারিত সময় শুরু হয় এবং সারা দিন নির্বিঘ্নে খেলা হয়, তাহলে বাংলাদেশকে মুখোমুখি হতে হবে কঠিন চ্যালেঞ্জের। সে চ্যালেঞ্জ ম্যাচ বাঁচানোর। সে চ্যালেঞ্জ ৩০৪ রানের মাঝারী স্কোরের প্রতিউত্তরে ইনিংস পরাজয় এড়ানোর। এখন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তা পারবেন কি না? সেটাই দেখার।

কাল বুধবার শেষ দিন সকাল সকাল সুর্য উঠলে কিন্তু আর কোন বাধা থাকবে না। তখন শাহিন শাহ আফ্রিদি আর হাসান আলির প্রচন্ড গতি আর সুইংয়ের মুখে পড়তে হবে। যা হবে সাজিদ খানের মাঝারি স্পিনের চেয়ে অনেক ধারালো। অনেক বেশি কঠিন।

এআরবি/আইএইচএস