সদ্য পদত্যাগী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে নায়িকা মাহিয়া মাহির ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার জেরে প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
Advertisement
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার হারুন অর রশিদ এ কথা জানান।
ডা. মুরাদ হাসান গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহারের কথা বলেছেন। এধরনের কাজে ব্যবহার হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি অন্য কোনো বাহিনীর কথা বলবো না। যেহেতু তিনি (মুরাদ হাসান) ডিবির কথা উল্লেখ করেছেন। প্রয়োজনে তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো।’
নায়ক ইমনের মোবাইল থেকে অডিওটি ছড়িয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। আমরা এখনো তদন্ত করছি এটা।’
Advertisement
আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ অভিযোগ দিলে নায়ক ইমন ও মাহিয়া মাহিকে একসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না জানতে চাইলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ যদি অভিযোগ দায়ের করে এবং আমাদের ডিবি সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ আসে তাহলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। কোনো কিছু ভাইরাল হলে আমাদের ডিবির সাইবার ইউনিট দেখভাল করে ও তদন্ত করে।’
মাহি যদি দেশে আসে তাকেও আপনারা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা মাহিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবো।’
সেদিন ফোনালাপের পরে ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে এখনো আসেনি। আমরা প্রয়োজনে সবার সঙ্গেই কথা বলবো।’
নায়ক ইমনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে তিনি নায়িকাদের বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেন, প্রতিমন্ত্রীর কাছেও তিনি নিয়ে যাওয়ার কথা বলছিলেন, আপনারা ইমনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ পেলেই বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো।’
Advertisement
সম্প্রতি তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান এবং তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে অসৌজন্যমূলক কথা বলেন। এছাড়া এর কিছু পরই প্রতিমন্ত্রী মুরাদের একটি কথোপকথন ফাঁস হয়, যেখানে তিনি অশ্লীল ভাষায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য বলেন। ফোনে চিত্রনায়ক ইমনকে তিনি বলেন, ঘাড় ধরে যেন মাহিকে তার কাছে নিয়ে যান। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে ডা. মুরাদের শাস্তির দাবি ওঠে।
এরপর সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ডা. মুরাদ হাসানের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন, ‘সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে এবং তিনি তাকে আগামীকালের মধ্যে পদত্যাগ করতে বলেছেন। আমি আজ রাত ৮টায় তাকে বার্তাটি পৌঁছে দিই।’
এদিকে আজ ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে নিজ মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠান ডা. মুরাদ হাসান। মঙ্গলবার দুপুরে সাড়ে ১২টায় পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন।
টিটি/এআরএ/জেআইএম