রাজনীতি

‘অরুচিকর মন্তব্যে’ মুরাদের গ্রেফতার দাবি রিজভীর

জিয়া পরিবার সম্পর্কে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে অরুচিকর ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। এ ঘটনায় অবিলম্বে ডা. মুরাদকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

Advertisement

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এক সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা।

রিজভী বলেন, মন্ত্রিসভায় এখন অমানুষরাও মন্ত্রী। বখাটে মন্ত্রীদের একজন হচ্ছেন মুরাদ। জিয়া পরিবার নিয়ে যে অশ্রাব্য, অশালীন কথা বলেছেন শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় এ ধরনের লোকই মানায়। তিনি (তথ্য প্রতিমন্ত্রী) কিন্তু এক জায়গায় বলেছেন, ‘আমি যা বলি উপরের নির্দেশেই বলি অর্থাৎ কাকে ইঙ্গিত করেছেন আপনারা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছেন।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি দেশের চরম অরাজক পরিস্থিতিতে দেশের স্বাধীনতা এনে দিলেন আর তার সহধর্মীণী সব সংকটে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন তার পরিবার নিয়ে এই নোংরা-অসভ্য কথা শেখ হাসিনার কেবিনেটের মন্ত্রী ছাড়া কেউ বলতে পারেন না। ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের মতো ভদ্র মানুষের সামান্য একটি কথা ওলট-পালট হওয়ার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদেরও (তথ্য প্রতিমন্ত্রী) গ্রেফতার করতে হবে। যারা অন্যায়ভাবে নোংরা কথাবার্তা বলছেন তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ভোটে কিন্তু এখন আর মানুষ যায় না। দ্বিপদবিশিষ্ট মানবজাতি, এরা কেউ ভোট দিতে যায় না। তাদের নির্বাচনে কারা ভোট দিতে যায় এটা এখন সব জায়গায় প্রতিষ্ঠিত, গরু-ছাগল ভোট দিতে যায়। কারণ ভোটারদের ভোট দেওয়ার তো অধিকার নাই। বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত জনপ্রিয় নেত্রী। তিনি বারবার নির্বাচিত হয়েছেন জনগণের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে, লড়াই করে, দিনের আলোতে আর শেখ হাসিনা নির্বাচিত হন মধ্যরাতে। সুতরাং দুজনের মধ্যে পার্থক্য তো আছেই।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দেশের বরেণ্য চিকিৎসকসহ বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা বলেছেন, বেগম জিয়ার শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। সেটা তাচ্ছিল্য করছে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও তাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী তো আছেনই। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোনোদিন ভালো কথা শেখেননি। তিনি কোনোদিন শুবচন শেখেননি। ওনার (খালেদা জিয়ার) অসুস্থতা নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন। আরেকজন আছেন আইনমন্ত্রী, তিনি শুধু আইনি প্রক্রিয়া দেখেন। তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় দস্যু-ডাকাত, শীর্ষ-সন্ত্রাসীরা আইনের ফাঁদ দিয়ে চলে যায়। আর যারা গণতন্ত্রের পক্ষে, ন্যায়ের পক্ষে, আইনের পক্ষে তাদের তিনি অন্যায়ভাবে সাজা দেন।’

উপস্থিত নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে রিজভী আরও বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও এত অল্প সময়ে আন্তরিকতার সঙ্গে আপনারা ঢাকায় আসছেন এটা আমাকে অত্যন্ত অনুপ্রাণিত করেছে। গতকাল থেকেই শুনছি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা লঞ্চ-বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঢাকায় আসছেন। এই যে এক দানব রাষ্ট্রক্ষমতায় বসে আছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদেরই অংশ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ।’

Advertisement

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

সমাবেশে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল বাশার আকন্দ, ত্রিশালের জয়নাল, আবু তাহের হিরন, আবদুল আজিজ, তানজিন চৌধুরী লিলি, শরিফ আহমেদ, আমিরুল ইসলাম মনি, ময়না, রিপা, রচি, মিরসরাইয়ের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নূরুল আমিন, ঢাকার আতাউর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব মো. আব্দুর রহিম, বগুড়া থেকে মোর্শেদ মিল্টন, আব্দুর রহিম, ভেড়ামারার তৌহিদুল ইসলামসহ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চাঁদপুর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, বগুড়া, সিলেট, সুনামগঞ্জ বিভিন্ন জেলা থেকে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা অংশ নেন।

কেএইচ/এআরএ/জেআইএম