দেশজুড়ে

বরিশালে কারচুপির অভিযোগে ২ প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন

বরিশাল জেলার ছয় পৌরসভায় ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা ভোট পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। চরমোনাই অনুসারী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দুই প্রার্থীর বর্জনের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এছাড়া, ভোট কারচুপির অভিযোগ এনেছেন মুলাদী পৌরসভায় ১৪ দলের শরীক ওয়ার্কার্স পার্টির মেয়র প্রার্থী সেলিম আহমেদ চৌকিদারও।মেহেন্দীগঞ্জে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী গিয়াসউদ্দিন দীপেন অভিযোগ করে জাগো নিউজকে বলেন, নির্বাচন শুরুর চার ঘণ্টার মধ্যে মেহেন্দীগঞ্জে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ব্যালট ছিনিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দেন। প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার না পেয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন। দীপেন জানান, প্রতিটি কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। আর ধানের শীষের কর্মী-সমর্থকদের কাছ থেকে ব্যালট ছিনিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর লোকজন। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করেছেন। তাই তিনি পুনঃরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছেন। এ পৌরসভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন খান ভোট দিতে গেলে নৌকা প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা বাধা দেন। এমনকি তার পরিবারের সদস্যদেরও ভোট দিতে দেয়া হয়নি। জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করেন বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে নৌকা প্রতীকে সিল পিটিয়েছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। এ কারণে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি নির্বাচন বর্জন করেন।মুলাদী পৌরসভায় ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মনজুর হোসেন এবং ১৪ দলের শরীক ওয়ার্কার্স পার্টির মেয়র প্রার্থী সেলিম আহমেদ চৌকিদারও কেন্দ্রের মধ্যে ভোটারদের কাছ থেকে মেয়র পদের ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে নৌকা মার্কায় জোর করে ভোট দেয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে। এ পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী আসাদ মাহমুদ অভিযোগ করেন, ভোট শুরুর পর পৌরসভার ৯টি কেন্দ্রের সবগুলো থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেন ক্ষমতাসীনরা। এছাড়াও সাধারণ ভোটারদের হাত থেকে মেয়র প্রার্থীর ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে নৌকা মার্কায় সিল দেয়ার অভিযোগ করেন তিনি। গৌরনদী পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী শরীফ শফিকুর রহমান স্বপন অভিযোগ করেন, আগে থেকে যা আশঙ্কা করছিলেন, সেটাই সত্যি হয়েছে। ভোট শুরুর পর তার পৌরসভার ১৩ কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্ট বের করে দিয়ে ক্ষমতাসীনরা ইচ্ছেমতো সিল পিটিয়েছে। ওই পৌরসভার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী ওবায়দুল নির্বাচন বর্জন করেন। বানারীপাড়া পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী গোলাম মাহমুদ মাহবুব মাস্টার অভিযোগ করেন, তার পৌরসভায় ক্ষমতাসীনরা সবগুলো কেন্দ্র দখল করে নৌকা প্রতীকে সিল দিয়েছেন। তিনি কারচুপির অভিযোগ করে পুনরায় সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করেন। নির্বাচন শুরুর পরপরই উজিরপুরের পরামানন্দ সাহা কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী শহিদুল ইসলাম খান দেখতে পান সেখানকার ২শ` ব্যালট কম দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা বাহিরে ছড়িয়ে পড়লে ভোটারদর সঙ্গে বহিরাগতদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। ভোট গ্রহণ প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর পুনরায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন তার ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দিয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা। এমনকি বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকায় সিল দেয়া হয়েছে। তিনি পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া বানারীপাড়া এবং বাকেরগঞ্জেও ভোট কারচুপির অভিযোগ করে বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা পুনঃরায় সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করেছেন। প্রার্থীদের অভিযোগ সম্পর্কে জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান বলেন, উৎসবমুখর সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে সব কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো কেন্দ্রের মধ্যে বিশৃঙ্খলার কোনো খবর তার কাছে নেই। কেন্দ্রের বাইরে কোন প্রার্থী কি অভিযোগ করেছেন, তা তার জানা নেই। সংক্ষুব্ধ হয়ে প্রার্থীরা নানা অভিযোগ করতেই পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।সাইফ আমীন/এমজেড/আরআইপি

Advertisement