শরীরের নানা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব আকুপ্রেশারের সাহায্যে। এটি একটি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি। এর ভালো দিক হচ্ছে নিজে নিজেই শরীরের বিভিন্ন সমস্যা কমানোর আকুপ্রেশার করা যায়। শুধু হাত দিয়ে নিজেই আকুপ্রেশার করে অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব!
Advertisement
শরীরে বিভিন্ন স্থানে ব্যথা, অনিদ্রা, অ্যালার্জির সমস্যা, মাথাব্যথা, সাইনাসে ও মাইগ্রেনসহ শারীরিক নানা সমস্যার সমাধান পেতে অনেকেই ভরসা রাখেন আকুপ্রেশারে। এ ছাড়াও স্নায়ুর নানা সমস্যা, স্নায়ুর রোগ, পক্ষাঘাত, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েডের সমস্যাতেও এই পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকরী। এই পদ্ধতিতে হাত-পা, মুখ, কান, মাথাসহ শরীরের বিশেষ কিছু ‘প্রেসার পয়েন্ট’এ চাপ দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
জানা যায়, ৬ হাজার বছর আগে ভারতে আধুনিক আকুপ্রেশার চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত ছিলো। পরবর্তীকালে এই চিকিৎসা পদ্ধতি শ্রীলঙ্কা হয়ে চিনে ব্যাপক পরিচিতি পায়। আকুপ্রেশার, সুজোক, রিফ্লেক্সোলজি, জোন থেরাপি ইত্যাদি নানা নামে সারা বিশ্বে এই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা লাভ করে।
অবাক করা বিষয় হলো, আকুপ্রেশার পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোও সম্ভব। এই পদ্ধতিতে আসলে শরীরের বিশেষ কয়েকটি প্রেশার পয়েন্টে পরিমিত চাপ দিতে হয়। এতে মেটাবলিজম বেড়ে যায়। ফলে ওজন কমতে থাকে।
Advertisement
আঙুলের ডগা দিয়ে এই প্রেশার পয়েন্টগুলোতে চাপ দিতে হবে। এই পদ্ধতি এতোটাই সহজ যে কেউ এটি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কারও সাহায্যের প্রয়োজনও হবে না। শরীরের ৪টি পয়েন্টে যদি দৈনিক আকুপ্রেশার পদ্ধতিতে প্রেশার ম্যাসাজ করতে পারেন, তাহলে দ্রুত ওজন কমবে। জেনে নিন কোন ৪টি পয়েন্ট-
উপরের ঠোঁট ও নাকের মাঝখান
চিনা ভাষায় এই পয়েন্টটির নাম পোশাকি নাম হল ‘শুয়িগো স্পট’। এই পয়েন্টে আঙুলের ডগা দিয়ে দৈনিক ২-৩ মিনিট গোলাকারে অল্প চাপ দিয়ে মাসাজ করুন। এটি আপনার মেটাবলিজমের হার অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে।
কনুইয়ের ভিতরের দিক
Advertisement
আপনার হাতটি অল্প ভাঁজ করুন। এবার কনুইয়ের একটু নীচে দেখবেন আঙুল দিয়ে চাপ দিলে ছোট্ট একটা গর্ত তৈরি হয়। এটিকেই বলা হয় ইনার এলবো। এই পয়েন্টে বুড়ো আঙুল দিয়ে ধীরে ধীরে ২-৩ মিনিট চাপ দিন। আমাদের হজমশক্তি বাড়াতে এই প্রেশার পয়েন্টে আকুপ্রেশার ম্যাসাজ খুবই কার্যকরী।
ইয়ার পয়েন্ট
কানের লতির নিচের দিকে ঠিক যেখান থেকে চোয়াল শুরু হচ্ছে, সেটিই হলো ইয়ার পয়েন্ট। দুই কানের নীচে এই পয়েন্টে দুই হাতের তর্জনী দিয়ে প্রতিদিন ১-২ মিনিট চাপ দিন। এই পয়েন্টটি আমাদের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। বেশি ক্ষুদা লাগার সমস্যা থাকলে এই পয়েন্টে দিনে অন্তত ২ বার আকুপ্রেশার দিতে পারেন।
থাম্ব পয়েন্ট
দুই হাতের বুড়ো আঙুলের কড়ের ঠিক উপরে থাকে এই প্রেশার পয়েন্টটি। এটিতে যদি দিনে ২ মিনিট করে চাপ দিতে পারেন, তাহলে আপনার থাইরয়েড গ্ল্যান্ডটিকে বেশি মাত্রায় সক্রিয় করে মেটাবলিজম রেট বাড়তে সাহায্য করবে। ফলে বাড়তি ওজম কমানো যায় দ্রুত।
সতর্কতা-
>> খাওয়ার পর বা ভরা পেটে আকুপ্রেশার করা একেবারেই উচিত নয়।
>> দিনে দু’বারের বেশি আকুপ্রেশার করা উচিত নয়।
>> অন্তঃসত্ত্বা নারীদের আকুপ্রেশার করা একেবারেই উচিত নয়।
>> কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রেসার পয়েন্টে একটানা ২ মিনিটের বেশি আকুপ্রেশার করা উচিত নয়।
>> দিনে কখনো একটানা ২০ মিনিটের বেশি আকুপ্রেশার করবেন না।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া/হেলথলাইন/জি নিউজ
জেএমএস/এমএস