হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির শিকার হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়া। ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে কুড়ি ওভারের সিরিজের পর দলে থেকেও চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট খেলা সম্ভব হয়নি। তবে ঢাকায় শেষ টেস্টে মাঠে নামবেন দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
Advertisement
জাতীয় দল চট্টগ্রাম থেকে রাজধানীতে ফিরে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে অনুশীলন করেছে। সাকিব কয়েকদিন ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিজেকে তৈরি করে বৃহস্পতিবার দলের সঙ্গে প্র্যাকটিসে যোগ দিয়েছেন। ফিজিক্যাল ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং-বোলিংটাও ঝালিয়ে নিয়েছেন। নেটে ব্যাটিং-বোলিং।
ইতিহাস জানাচ্ছে, মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাকিব শেষবার টেস্ট খেলতে নেমেছেন তিন বছর আগে, ২০১৮ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ইনিংস ও ১৮৪ রানে, সাকিব ছিলেন অধিনায়ক। ব্যাটে-বলে সামনে থেকে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন ।
ব্যাট হাতে ৮০ রানের (১৩৯ বলে) দারুণ ইনিংস খেলার পর বল হাতে ২৭ রানে তিন উইকেট নিয়ে ক্যারিবীয়দের ১১১ রানে অলআউট করতে রাখেন সহায়ক ভূমিকা। ম্যাচ জয়ের আসল কাজটি করে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ, ৫৮ রানে ৭ উইকেট দখল করে। পরের ইনিংসেও মিরাজ ৫৯ রানে ৫ উইকেট দখল করেন, সাকিব পান এক উইকেট।
Advertisement
ইনজুরির কারণে মাঝে কিছু ম্যাচে জাতীয় দলকে সার্ভিস দিতে না পারলেও চলতি বছর জুলাই মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাতীয় দলের হয়ে শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন সাকিব।
ব্যাট-বলে বরাবরই বাংলাদেশের প্রধান চালিকাশক্তি। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির মত টেস্টেও বাংলাদেশের বাংলাদেশের এক নম্বর অলরাউন্ডার। সর্বাধিক ম্যাচ জেতানো পারফরমারও। টেস্টেও বোলিংয়ের পাশাপাশি সাকিবের ব্যাটিং টিম বাংলাদেশের প্রধান সম্পদ।
বোলার সাকিব অধিনায়ক মুমিনুল হকের প্রধান আস্থা শক্তি এবং সবচেয়ে বড় কার্যকর অস্ত্র। ঠিক ৩ টেস্ট আগেও হোম অব ক্রিকেটে দল জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন অলরাউন্ডার সাকিব। কিন্তু পরিসংখ্যান জানান দিচ্ছে শেষ ৫ টেস্টে বোলার সাকিব একবারের জন্য ৫ উইকেট পাননি।
টেস্টে সব্যসাচী সাকিবের শেষ ৫ বা তার বেশি উইকেট শিকার তিন বছর আগে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬৬ রানে জিতলেও, জ্যামাইকার কিংস্টনের সাবিনা পার্কে দ্বিতীয় ইনিংসে তার ৬ উইকেট (৩৩ রানে) আছে। তারপর আর ৫ টেস্ট খেললেও আর ৫ উইকেট পাননি সাকিব আল হাসান। এর মধ্যে ইনিংসে সেরা বোলিং ৪/৮২ (এ বছর জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে) আর সেরা ম্যাচ ফিগার ৫/৭৩ (২০১৮ সালে নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে চট্টগ্রামে)।
Advertisement
ওপরে যে পাঁচ টেস্টের কথা বলা হলো, তার মধ্যে একটি টেস্টই শুধু খেলেছেন ঢাকায় এবং সেই টেস্টেই জিতেছে বাংলাদেশ। সে ম্যাচেও ৮০ রানের দারুণ ইনিংস খেলার পাশাপাশি ৯২ রানে ৪ উইকেট ছিল সাকিবের।
পাকিস্তানের বিপক্ষে চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটে একদিনই বল এক-আধটু ঘুরেছে। সেদিনই পাকিস্তানিদের টুটি চেপে ধরেছিলেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। প্রতিপক্ষকে স্পিন জালে আটকে ১১৬ রানে ৭ উইকেট দখল করে নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং করেন তাইজুল।
ধরেই নেয়া যায়, শেরে বাংলার পিচে আরও একটু বেশি বল ঘুরবে। শেরে বাংলার ‘টিপিক্যাল’ ধীরগতির খানিক টার্নিমহ পিচ পেলে সাকিব হয়ে উঠতে পারেন আরও দুরন্ত। আরও একবার ইনিংসে ৫ বা তার বেশী উইকেট শিকারের হাতছানি সাকিবের। তিনি বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলে বাংলাদেশের টিম পারফরম্যান্স আরও ভাল হবে। তখন চট্টগ্রামের চেয়ে ঢাকায় আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা থাকবে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়? মাঠে ফিরে কী করেন সাকিব!
এআরবি/এসএএস/জিকেএস