শরীয়তপুরে হঠাৎ কোল্ড ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গড়ে প্রতিদিন অন্তত ১৫ রোগী ভর্তি হচ্ছেন সদর হাসপাতালে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম। ওয়ার্ড ছাড়িয়ে মেঝেতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা।
Advertisement
এদিকে ঠাণ্ডা ও শ্বাসকষ্টের রোগীও বেড়েছে। ফলে হাসপাতালের চিকিৎসকের রুম, মেডিসিন কর্ণারসহ করিডোরে রোগীদের দীর্ঘলাইন দেখা যায়।
২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে অন্তত ১৫০ জন ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে শিশু ও নারী রোগীর সংখ্যা বেশি। অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সকাল থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ২৫ জন ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি হয়েছেন। অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। তবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কারো মৃত্যু ঘটেনি।
Advertisement
সদর উপজেলার সুবচনি এলাকার আরিফ হোসেন বলেন, গত রোববার রাতে ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। বেড না পেয়ে তাকে মেঝেতে রাখতে হয়। এরপর রোগী কমলে রুমের বাইরের করিডোরে বেডে নেওয়া হয়। আইভি স্যালাইন, রাইস স্যালাইন ছাড়া সব কিছু বাহির থেকে থেকে কিনে আনতে হয়েছে। হাসপাতাল থেকে কোনো ওষুধ, সিরাপ পাইনি।
সদরের কাগদি এলাকার আল আমিন বলেন, মেয়েকে নিয়ে গত শনিবার হাসপাতালে এসেছি। মেয়েকে নিয়ে এখন আমরাই অসুস্থ হবার অবস্থা। হাসপাতালে বেড পাইনি। চাদর বিছিয়ে মেঝেতে শুয়ে রেখেছি মেয়েকে।
সদরের চিতলিয়া এলাকার জাকির মাহমুদ বলেন, মেয়েকে নিয়ে দুইদিন হলো এসেছি। হাসপাতালে এসে বেড পাইনি। চাদর বিছিয়ে মেয়েকে নিয়ে মেঝেতে শুয়েছি। গত রাতে আমার মোবাইল চার্জার, ব্যাগ ও টাকা চোরে নিয়ে গেছে। এছাড়া আমার পাশের দুইজনের টাকা ও ব্যাগ চুরি হয়েছে। হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।
হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স খাদিজা জানান, একজন নার্স রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এখানে সব চাইতে বেশি সমস্যা নার্স। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রয়েছে ১৪ বেড। বেডের চেয়ে রোগী বেশি। তাই মেঝেতে রাখতে হচ্ছে তাদের।
Advertisement
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে। হাসপাতালে স্যালাইনের সংকট নেই। ধারণা করা হচ্ছে হঠাৎ ঠাণ্ডা পড়ায় ডায়রিয়া, ঠাণ্ডা ও শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন ধরনের রোগী বেড়েছে।
মো. ছগির হোসেন/আরএইচ/এমএস