সর্বশেষ শনাক্ত হওয়া করোনার ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মিউটেট হওয়া সংস্করণ। এর মিউটেশনের তালিকা এত দীর্ঘ যে, একজন বিজ্ঞানী একে ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
Advertisement
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের নাম দিয়েছে ওমিক্রন। গ্রিক বর্ণমালার আলফা, ডেল্টার মতোই নতুন এ ভ্যারিয়েন্টের কোড-নেম ঠিক করা হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এক সংবাদ সম্মেলনে একজন বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট মিউটেট করেছে ৫০ বার। এর স্পাইক প্রোটিন বদলেছে ৩০ বার। মানুষের দেহের মধ্যে ঢুকতে কোভিড ভাইরাস এই স্পাইক প্রোটিন ব্যবহার করে। এবং করোনার ভ্যাকসিন সাধারণত এই স্পাইক প্রোটিনকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়।
ভাইরাসের যে অংশটি প্রথম মানুষের দেহকোষের সঙ্গে সংযোগ ঘটায় তার নাম রিসেপ্টার বাইন্ডিং ডোমেইন। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট সেই রিসেপ্টার বাইন্ডিং ডোমেইনে মিউটেশন ঘটিয়েছে ১০ বার। সেই তুলনায় করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে এই পরিবর্তন হয়েছে মাত্র দুবার।
Advertisement
শঙ্কার কথা হলো, চীনের উহানে করোনার প্রথম যে জীবাণুটি দেখা গিয়েছিল তার তুলনায় এই ভাইরাস এখন অনেকখানিই ভিন্ন। এর মানে হলো, কোভিডের মূল স্ট্রেইনকে মাথায় রেখে তৈরি করা ভ্যাকসিন এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর নাও হতে পারে।
তবে কোভিডের অনেক ভ্যারিয়েন্ট গবেষণাগারে বিপজ্জনক বলে মনে হলেও পরে তা ভুল প্রমাণিত হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে বেটা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে সবাই দুর্ভাবনায় ছিলেন। কারণ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেদ করতে এর কোনো জুড়ি ছিল না। কিন্তু পরে দেখা গেল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট-এর চেয়েও দ্রুত গতিতে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
বেটা ভ্যারিয়েন্ট শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ভেদ করতে পারতো। আর কিছু না। ডেল্টার সংক্রমণ ক্ষমতা ছিল বেশি। ইমিউন সিস্টেমকে এড়াতেও পারতো মোটামুটি, বলছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাভি গুপ্তা।
গবেষণাগার থেকে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে ঠিকই, কিন্তু এর সম্পর্কে যেসব প্রশ্ন রয়েছে তার জবাব মিলবে বাস্তব পরিস্থিতি থেকে।
Advertisement
এই ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে এখনই কোনো উপসংহারে পৌঁছানো যাবে না। কিন্তু যেসব ইঙ্গিত এখনই পাওয়া যাচ্ছে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার খবর জানতে পারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
নতুন ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা, বেলজিয়াম, হংকং এবং ইসরায়েলেও পাওয়া যায়। আর সর্বশেষ যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
এমএইচআর/এমএস