আইন-আদালত

আবরার হত্যা মামলার রায় রোববার

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় দেওয়া হবে রোববার (২৮ নভেম্বর)। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করবেন।

Advertisement

এর আগে ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন একই ট্রাইব্যুনাল।

গত ২৪ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে পলাতক তিন আসামিসহ ২৫ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।

এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও ৪৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ পড়ে শোনান। এসময় বিচারক তাদের প্রশ্ন করেন, আপনারা দোষী না নির্দোষ? উত্তরে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। এরপর আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন।

Advertisement

গত ৮ সেপ্টেম্বর আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে রাষ্ট্রপক্ষ পুনরায় অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আবেদন করে। এরপর আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আসামিদের বিরুদ্ধে পুনরায় অভিযোগ গঠন করেন।

গত বছরের ৫ অক্টোবর এ মামলার বাদী ও আবরারের বাবা বরকতুল্লাহর আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর গত ২৪ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান মামলার শেষ সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন। গত ৪ মার্চ তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরার মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এসময় আদালত আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৪ মার্চ দিন ধার্য করেন।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ওইদিন রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরদিন ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।

Advertisement

ওই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।

অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন ও তদন্তে প্রাপ্ত আরও ছয়জন রয়েছেন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন।

গ্রেফতার ২২ জন হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু।

মামলার তিন আসামি এখনো পলাতক। তারা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দুজন এজাহারভুক্ত ও শেষের জন এজাহারবহির্ভূত আসামি।

২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় মোট ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

জেএ/জেডএইচ/জেআইএম