জাতীয়

রাইড শেয়ারিংয়ে কমিশন কমালো পাঠাও, শুভঙ্করের ফাঁকি বলছেন চালকরা

রাইড শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে কমিশন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাঠাও এবং ওভাই। তবে কমিশন কমানোর এ সিদ্ধান্তকে শুভঙ্করের ফাঁকি বলছেন চালকরা। আরেক রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবার এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।

Advertisement

বুধবার (২৪ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে পাঠাও জানায়, বৃহস্পতিবার থেকে পিক আওয়ারে (সকাল ৮টা থেকে ১১টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা) পর্যন্ত ১০ শতাংশ এবং অফ-পিক আওয়ারে ১৫ শতাংশ কমিশন কার্যকর হবে। আরেক রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ওভাই সিএনজি চালিত অটোরিকশার জন্য ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে কমিশন নেবে। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার মধ্যে কার রাইডের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ এবং ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেটে ১০ শতাংশ হারে কমিশন নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

তবে রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোর এই কমিশন কমানোকে শুভঙ্করের ফাঁকি বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকা রাইড শেয়ারিং ড্রাইভার্স ইউনিয়নের (ডিআরডিইউ) সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ।

জাগো নিউজকে তিনি বলেন, পাঠাও শুধুমাত্র মোটরসাইকেলের জন্য কমিশন কমিয়েছে, গাড়ির জন্য কমায়নি। অন্যদিকে ওভাই শুধুমাত্র আমাদের সংগঠনের সদস্যদের জন্য ১২ শতাংশ কমিশন রাখছে। পাঠাও কমিশন কমালেও তা একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, এছাড়া অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কমিয়েছে তারা।

Advertisement

বেলাল আহমেদ বলেন, মোটরসাইকেল ও গাড়িতে ১৫ শতাংশের নিচে কমিশন না রাখা পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে সপ্তাহে ৫ দিন। যদি আমাদের দাবি মানা না হয়, তাহলে আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো।

তিনি বলেন, আমরা কেউ খ্যাপে গাড়ি চালাতে চাই না। অ্যাপেই গাড়ি চালাতে চাই। তবে এক্ষেত্রে আমাদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

উবার বর্তমানে বাংলাদেশে তার সমস্ত ট্রিপের ভাড়ার ওপর থেকে ২৫ শতাংশ হারে কমিশন কাটে। বৃহস্পতিবারের আগে পাঠাও ঢাকায় দুই চাকার পরিবহনের জন্য ১৫ শতাংশ হারে এবং চট্টগ্রাম ও সিলেটে ২৫ শতাংশ হারে কমিশন কাটতো।

করোনায় উপার্জন কমে যাওয়া ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে টিকে থাকতে চালকরা রাইড শেয়ারিং কোম্পানির কমিশন কমানোর দাবি জানান। চালকরা বলছেন, কমিশনের হার বেশি হওয়ায় তারা খ্যাপে গাড়ি, মোটরসাইকেল চালাতে বাধ্য হচ্ছেন।

Advertisement

তবে গত অক্টোবরে অ্যাপে রাইড শেয়ারিং না করে চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহন করলে সংশ্লিষ্ট চালক ও যাত্রীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানায় বিআরটিএ। এতে উভয়সংকটে থাকা চালকরা ১০ শতাংশ কমিশন ও ৬ দাবিতে কর্মসূচিতে নামছেন।

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, ১৪টি রাইড শেয়ারিং কোম্পানির এক লাখ যানবাহন নিবন্ধিত আছে।

সব ধরনের রাইডের জন্য ১০ শতাংশ হারে কমিশন, পুলিশি হয়রানির অবসান ঘটানোসহ ৬ দাবিতে আগামী রোববার (২৮ নভেম্বর) থেকে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতিতে যাবেন রাইড শেয়ারিং চালকরা।

শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকা রাইড শেয়ারিং ড্রাইভার্স ইউনিয়নের (ডিআরডিইউ) সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করছেন। তিনি বলেন, ১৫ শতাংশের নিচে কমিশন না রাখা পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে। এটি অহিংস ও স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কর্মসূচি।

এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ডিআরডিইউ দাবি বাস্তবায়নে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করে। সেসময় বিআরটিএ সহ ৮টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিঠিও পাঠায় সংগঠনটি। তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- শ্রম আইনে রাইড শেয়ারিং চালকদের অন্তর্ভুক্ত করা, অপরাধ প্রমাণ ব্যতীত কোন চালকের আইডি বন্ধ না করা, দূরত্ব ও ওয়েটিং অনুযায়ী চালককে অর্থ পরিশোধ করা, রাইড শেয়ারিং চালকদের জন্য পার্কিং ব্যবস্থা করা ও এনলিস্টমেন্ট কৃত যানবাহনগুলোকে এআইটির আওতামুক্ত করা।

এসএম/কেএসআর/এএসএম