ফিচার

ভূমিকম্প নিয়ে চমকে ওঠার মতো ১১ তথ্য

বিশ্বে প্রতি বছরই ছোট-বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে। সম্প্রতি ভূমিকম্পের সংখ্যাও বেড়েছে। তবে প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ সম্পর্কে এমন অনেক বিষয় আছে যা আমাদের অজানা। তেমনই ভূমিকম্প সম্পর্কিত ১১টি অবাক করা তথ্য জেনে নিন-

Advertisement

>> যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্য অনুসারে, প্রতিবছর গড়ে ১৭টি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ৭ এর উপরে। বছরে একবার ৮ মাত্রার ভূমিকম্প ঘটে। তবে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বছরে লাখ লাখ ভূমিকম্প হয়। এর অনেকগুলো হয়তো টেরই পাওয়া যায় না।

>> ভূমিকম্পে দিনের দৈর্ঘ্য কমবেশি হতে পারে। জাপানের উত্তর-পূবে ২০০৯ সালের ১১ই মার্চ একটি বড়ো ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার মাত্রা ছিলো ৮ দশমিক ৯। এর ফলে পরিবর্তন ঘটে পৃথিবীর ভরের বণ্টনে। তার প্রভাবে পৃথিবী ঘুরতে থাকে সামান্য দ্রুত গতিতে আর তখন দিনের দৈর্ঘ্য কমে যায়। সেদিন দিন ১.৮ মাইক্রো সেকেন্ড ছোট ছিলো।

>> যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহর প্রত্যেক বছর গড়ে দুই ইঞ্চি করে লস অ্যাঞ্জেলসের দিকে সরে যাচ্ছে। এই একই গতিতে বাড়ে আমাদের আঙ্গুলের নখ।এই গতিতে চলতে থাকলে এই দুটো শহর কয়েক লাখ বছর পর একত্রিত হয়ে পড়বে।

Advertisement

>> জানলে অবাক হবেন, ভূমিকম্পের আগে স্থির পানি থেকে গন্ধ বের হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমিকম্পের আগে পুকুর, খাল-বিল, হ্রদ, জলাশয়ের স্থির পানি থেকে দুর্গন্ধ আসতে পারে। এ কারণেই ওই এলাকার বন্যপ্রাণীর আচরণেও পরিবর্তন ঘটে।

ওপেন ইউনিভার্সিটির প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগ বলছে, ২০০৯ সালে ইটালিতে এক ভূমিকম্পের সময় এক ধরনের ব্যাঙ সেখান থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলো। তারা ফিরে এসেছিলো ভূমিকম্পের পরে। বলা হয়, এই ব্যাঙ পানির রাসায়নিক পরিবর্তন খুব দ্রুত শনাক্ত করতে পারে।

>> ভূমিকম্পের পরেও পানিতে ঢেউ উঠতে পারে। একে বলা হায় শ্যাস। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমিকম্প হয়তো শেষ হয়ে গেছে কিন্তু তারপরেও কয়েক ঘণ্টা ধরে অভ্যন্তরীণ এই পানিতে তরঙ্গ অব্যাহত থাকতে পারে।

>> ভূমিকম্পের কথা মনে রেখেই ৫০০ বছর আগে ইনকা সভ্যতা ও জাপানি বাড়িঘর তৈরি করে। যাতে ঘন ঘন হওয়া ভূমিকম্পে তাদের ঘরবাড়ি না ধসে পড়ে।

Advertisement

>> ভূমিকম্পের কারণে চিলির একটি শহর ১০ ফুট পশ্চিমে সরে যায়। ২০১০ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি বড়ো ধরনের এক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিলো চিলির কনসেপসিওন শহরে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিলো ৮.৮। এর ফলে পৃথিবীর শক্ত উপরিভাগে ফাটল ধরে ও শহরটি ১০ ফুট পশ্চিমে সরে যায়।

>> অবাক করা তথ্য হলেও সত্যিই যে, ভূমিকম্পে খাটো হয়ে যায় এভারেস্ট। নেপালে ২০১৫ সালের ২৫শে এপ্রিল আঘাত হানে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প। কমে আসে হিমালয়ের অনেক পর্বতের উচ্চতাও। মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা কমে গিয়েছিলো এক ইঞ্চির মতো।

>> ভূমিকম্পের আগে প্রাণীর আচরণে পরিবর্তন ঘটে। ভূমিকম্পের ফলে যে শুধু ব্যাঙের আচরণেই পরিবর্তন ঘটে তা নয়।

ইন্দোনেশিয়া ও ২০০৪ সালে সুনামির আগে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, অনেক পশু পাখিকেই দেখা গেছে উঁচু এলাকার দিকে ছুটে যেতে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ভূমিকম্পের আগে ছোট ছোট কম্পন পশুপাখিরা টের পেয়ে যায়।

>> ব্রিটেনের এক প্রকৌশলী জন মাইকেল ভূমিকম্পের কারণ প্রথম উদঘাটন করেন। এই আবিষ্কার হয়েছে ১৮শো শতাব্দীর শুরুর দিকে। ভূকম্পনবিদ্যার জনক হিসেবে পরিচিত তিনি।

তার মতে, ভূ-পৃষ্ঠের বহু নিচে শিলা-খণ্ডের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে ভূমিকম্প হয়ে থাকে।

>> জাপানি পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, ভূমিকম্প ঘটেছিলো দৈত্যাকার এক ক্যাটফিশের কারণে।

এক দ্বীপে মাটির নিচে চাপা পড়েছিলো নামাজু নামক এক ক্যাটফিশ। পৌরাণিক কল্প কাহিনীতে বলা হয়, অনেক ভূমিকম্প হয়েছিলো এই মাছের কারণে।

প্রাচীন গ্রিকরা বিশ্বাস করতেন, সমুদ্রের দেবতা পজিডন রেগে গিয়ে পৃথিবীর ওপর আঘাত করলে ভূমিকম্প হতো।

সূত্র: বিবিসি

জেএমএস/জিকেএস