ধর্ম

সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি?

সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন কাজকে সবচেয়ে বড় গুনাহ সাব্যস্ত করেছেন। এ সম্পর্কে হাদিসের দিকনির্দেশনাই বা কী?

Advertisement

এমন অনেক মারাত্মক কাজ আছে যা কবিরা গুনাহ। এ সম্পর্কে অনেক বই রচিত হয়েছে। কোরআন-সুন্নাহর বর্ণনা থেকে তা সুস্পষ্ট। তবে কোরআন সুন্নাহর আলোকে এমন একটি গুনাহ আছে; যে গুনাহকারীকে আল্লাহ তাআলা কখনো ক্ষমা করবেন না। এটি অনেক বড় কবিরা গুনাহ।

বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে জানার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করেছিলেন। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর প্রশ্নের উত্তরে মুসলিম উম্মাহর জন্য নসিহত স্বরূপ একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস বর্ণনা করেন। তাহলো-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি?

Advertisement

তিনি বললেন, কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করা। অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।

এরপর তিনি বললেন, তারপর কোনটি?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার সঙ্গে খাবে, এ ভয়ে তোমার সন্তানকে হত্যা করা।

তিনি বললেন, তারপর কোনটি?

Advertisement

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে জিনা (ব্যভিচার) করা। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথার সত্যতা ঘোষণা করে নাজিল হলো-‘আর যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো ইলাহকে ডাকে না।’ (বুখারি)

হাদিসে পাকে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর সঙ্গে শিরককে প্রথমে এনেছেন। এটি সবচেয়ে বড় গুনাহ। এ গুনাহ ছাড়া মানুষ যত গুনাহ-ই করুক না কেন; আল্লাহ তাআলা চাইলে সব গুনাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন। কিন্তু তিনি শিরকের গুনাহ ক্ষমা করবেন না। কেননা এ প্রসঙ্গে কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন এভাবে-

اِنَّ اللّٰهَ لَا یَغۡفِرُ اَنۡ یُّشۡرَکَ بِهٖ وَ یَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ ذٰلِکَ لِمَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَ مَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰهِ فَقَدِ افۡتَرٰۤی اِثۡمًا عَظِیۡمًا

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে অংশীদার (শিরক) করার অপরাধ ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যার জন্য ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন। আর যে কেউ আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন (শিরক) করে, সে এক মহাপাপ করে।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৪৮)

কোরআনুল কারিমের এ গুনাহের কথাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে সবচেয়ে বড় গুনাহ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যে গুনাহের কোনো ক্ষমা নেই। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা যাবে না।

পাশাপাশি হাদিসে আরও যে দুইটি গুনাহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যেমন- অন্যায়ভাবে অভাবের ভয়ে নিজের সন্তানকে হত্যা করা এবং প্রতিবেশীর স্ত্রীদের সঙ্গে ব্যভিচার করা। এ দুইটি গুনাহও বড় গুনাহসমূহের মধ্যে অন্যতম।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শিরকের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। অন্যান্য সব গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। গুনাহমুক্ত জীবন পরিচালনাই মুক্তির একমাত্র উপায়

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসে উল্লেখিত গুনাহগুলো থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করে পরকালের সফলতা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জিকেএস