শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন জলিল সরদার। তার ডাক্তারি কোনো ডিগ্রি নেই। তারপরও নির্বাচনী পোস্টারে নিজের নামের পাশে লিখেছেন ‘ডা.’। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোজাম্মেল হক খান।
Advertisement
আব্দুল জলিল সরদার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ডাকের হাটি গ্রামের মৃত চান সরদারের ছেলে। বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক। তার নির্বাচনী প্রতীক চশমা।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক এ শিক্ষক ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত নাগেরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে গোসাইরহাট উপজেলার নলমুড়ি, নাগেরপাড়া, সামান্তসার, গোসাইরহাট, কুচাইপট্টি, আলাওলপুর ও কোদালপুর ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩৮ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য ৭৩ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ২০২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
Advertisement
নাগেরপাড়া ইউপিতে মোজাম্মেল হক খান (আনারস), জলিল সরদার (চশমা), মাস্টার মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন (হাতপাখা), এনায়েত করিম মিলু মাস্টার (ঘোড়া) প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনী সময় ঘনিয়ে আসায় ইউনিয়নগুলোর বাজার, অলিগলি, চায়ের দোকান, হোটেল, বিভিন্ন স্থাপনা ও বসতবাড়ির সামনে পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে। চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল সরদারও পোস্টার-ব্যানার করেছেন। তবে তার পোস্টারে নামের পাশে লেখা রয়েছে ‘ডা.’।
আব্দুল জলিল সরদার জাগো নিউজকে বলেন, “আমি কোনো এমবিবিএস ডাক্তার নই। বড় কোনো সার্টিফিকেট নেই। আমি একজন ডাক্তারের সঙ্গে থেকে কাজ করেছি। পরে পল্লীচিকিৎসক হয়েছি। জেলা, উপজেলা ও আমাদের এলাকায় আমি ‘ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত। আমার ব্যানার-পোস্টারে ‘ডাক্তার’ লেখা দেখে বাড়াবাড়ি করছেন প্রতিদ্বন্দ্বীরা। পোস্টার বাদ দিলেও আমি ‘জলিল ডাক্তার’। আমি প্রত্যন্ত অঞ্চলে যখন ডাক্তারি করেছি, মানুষকে সেবা দিয়ে মানুষের মন জয় করেছি, ওই সেবার কারণেই আমি মেম্বার ও চেয়ারম্যান হয়েছিলাম।”
জলিল সরদারের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোজাম্মেল হক খান (আনারস) জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জলিল সরদার ডাক্তার না হয়েও ব্যানার, পোস্টারে নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। হায়ার এডুকেটেড পরিচিতি লাভ করার জন্য ডাক্তার লিখে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন। আমার দৃষ্টিমতে এটা প্রতারণা। তাই আমি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। তবে তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তা আমি অবগত নই। আমি এই প্রতারণার বিচার চাই।’
Advertisement
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। এ পর্যন্ত যতটুকু পেয়েছি তার পেশা ডাক্তার না, অন্য পেশার মানুষ তিনি। আমাদের ভোটার তালিকা ডাটাবেজে যা উল্লেখ আছে তার শিক্ষাগত যোগ্যতায়, তাতে ডাক্তার শব্দটা যায় না। বিষয়টি তদন্ত করে তাকে শোকজ করা হবে।’
মো. ছগির হোসেন/এসআর/এমএস