স্মার্টফোন প্রযুক্তির অনেক বড় আর্শীবাদ। একটি স্মার্টফোনের কল্যাণে হাতের মুঠোয় পুরোবিশ্ব বন্দি করে রাখা যায়। এক মুহূর্তও আমরা এখন কল্পনা করতে পারি না স্মার্টফোন ছাড়া। শুধু কথা বলাই নয়, হাজারো কাজের সঙ্গী স্মার্টফোন। দিনের বেশির ভাগ সময় কাটে অনেকের মোবাইলের স্ক্রিনে স্ক্রল করে।
Advertisement
তবে কাজ ছাড়াই যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করছেন এই কাজে। তাদের এখনই সময় এই বদ অভ্যাসে লাগাম টানা। অজান্তে শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবহারকারী। স্মার্টফোন কাছে না থাকা একটি সমস্যার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘নোমোফোবিয়া’।
এই আসক্তি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বড় ঝুঁকি। এর মাধ্যমে তারা ধীরে ধীরে মানসিকভাবে দুর্বল হতে থাকেন। যারা স্মার্টফোনের ওপর অতি নির্ভরশীল বা আসক্ত হয়ে পড়েছেন তাদের জন্য বিপদ সংকেত। হয়তো অনেকবারই ভেবেছেন স্মার্টফোন থেকে দূরত্ব বজায় রাখবেন। কিন্তু সে যা তাই।
কীভাবে স্মার্টফোন ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনবেন চলুন কয়েকটি উপায় জেনে নেওয়া যাক-
Advertisement
> দিনে কাজের মধ্যে থাকলেও রাতে ঘুমানোর সময় ফোন ব্যবহার করার অভ্যাস কমবেশি সবারই। একটুখানি ফেসবুকে ঢুঁ মারতে গিয়ে কেটে যায় মাঝরাত। তাই ঘুমানোর সময় মুঠোফোন বিছানার আশেপাশে রাখবেন না। এতে ফোনের তেজস্ক্রিয়াজনিত ঝুঁকি থেকে যেমন মুক্ত থাকবেন, তেমনি ঘুম থেকে উঠেই স্মার্টফোনে চোখ রাখার অভ্যাস কমানো যায়।
> কোনো মিটিং কিংবা ক্লাসে মুঠোফোন বন্ধ করে ব্যাগে কিংবা টেবিলের ড্রয়ারে রেখে আসুন। মিসড কল অ্যালার্ট সার্ভিসের মাধ্যমে ফোন বন্ধ রাখার সময় কে কে ফোন করেছিলেন তা জানতে পারেন।
> খাওয়ার সময় স্মার্টফোনের পর্দায় চোখ রাখবেন না। এতে যেমন অমনোযোগী হয়ে বেশি খেয়ে ওজন বাড়িয়ে ফেলবেন, তেমনি চোখেরও বারোটা বাজাচ্ছেন।
> মুঠোফোনে ইমেইলের উত্তর দেওয়ার বদলে ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটারে অভ্যাস করুন।
Advertisement
> ফ্রিডম, অ্যাপডেটক্স, স্টে অন টাস্ক, ব্রেকফিসহ বিভিন্ন অ্যাপ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি কমাতে পারেন।
> মুঠোফোনে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন অ্যাপ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ রেখে আপনার আসক্তি কমাতে পারেন।
> প্রতিদিন সকালে পত্রিকা পড়ার অভ্যাস ও রাতে বই পড়ার অভ্যাস স্মার্টফোনে আসক্তি অনেকটা কমিয়ে আনে।
> ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সেটিংস অপশন থেকে নোটিফিকেশন বার্তা কমিয়ে নিতে পারেন।
> স্মার্টফোনে আসক্তি কমাতে সাধারণ মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরু করতে পারেন, যা শুধু কাজের জন্য কল দেওয়া আর খুদেবার্তা পাঠানোর জন্য ব্যবহার করবেন।
> বিভিন্ন আড্ডা কিংবা খেলার মাঠে নিজের অংশগ্রহণ বাড়ানোর চেষ্টা করুন। বন্ধুদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার, বন্ধুদের চোখে চোখ রেখে গল্প-আড্ডায় মেতে উঠুন, এতেও মুঠোফোন আসক্তি অনেক কমে আসে।
> যানজটে বসে মুঠোফোনে মুখ না গুঁজে ব্যাগে বই রাখতে পারেন। যানজটে মুঠোফোনে গান না শুনে বা ফেসবুক ব্যবহার না করে বই পড়ার অভ্যাস করুন।
> কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে সেলফি কিংবা ফোনে ছবি তোলার বদলে অনুষ্ঠানের অতিথিদের সঙ্গে পরিচিতি বাড়ান আর গল্প করার অভ্যাস করুন।
> দৈনন্দিন কাজের হিসাব, মিটিং কখন, কোথায় তা লেখার জন্য মুঠোফোনের অ্যাপ ব্যবহারের চেয়ে কিছুদিন ডায়েরিতে হাতে-কলমে লেখার অভ্যাস করুন।
কেএসকে/এএসএম