দেশজুড়ে

মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল সংলগ্ন নদী খালের বাঁধ অপসারণের দাবি

সুন্দরবন ও মংলা বন্দর রক্ষায় মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল খনন কাজের প্রথম পর্যায় সম্পন্ন হলেও কাঙ্খিত ফলাফল না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন খুলনার পরিবেশবাদী সংগঠন জন উদ্যোগ, খুলনা। দীর্ঘ সময় ধরে চ্যানেল খনন কাজে চ্যানেল সংলগ্ন রামপাল-মংলার প্রায় ৩শ`টি সরকারি রেকর্ডিয় খাল প্রভাবশালীদের থেকে দখলমুক্ত করতে না পারা এবং জোয়ার অববাহিকা বা জোয়ারাধার তৈরি করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি শিবসা নদীর শাখা নদীগুলো খননের ও দাবিও জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর একটি হোটেলে মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল সংলগ্ন নদী খালের বাঁধ অপসারণ ও শিবসা নদীর শাখা নদীগুলো খননের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জন উদ্যোগ, খুলনার আহ্বায়ক অ্যাড. কুদরত-ই-খুদা। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দুর্বলতার কারণে চ্যানেল খননে কাঙ্খিত ফল মিলছে না। বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন ও স্থানীয়দের আন্দোলন সংগ্রামের এক পর্যায়ে এর গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকার ২০১৪ সালের ১৫ জুন মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল খনন শুরু করে। একই বছরের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের শ্যালায় ফার্নেস অয়েলবাহী ট্যাংকার ডুবির পর মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ে পড়ে সুন্দরবন। সরকার ১৫-১৬টি ড্রেজার মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে দ্রুত গতিতে চ্যানেল খনন কাজ শুরু করে। ২০১৫ সালের ১৫ জুন চ্যানেলটি পরিপূর্ণভাবে খুলে দেয়ার জন্য সরকার সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করলেও সেটি নানা কারণে সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ গত ৩ জুন ৬ থেকে ৮ ফুট ড্রাফটের ছোট আকারের ভেসেল এবং গত ৩ অক্টোবর ছোট-বড় আকারের ভেসেল চ্যানেল দিয়ে চলাচল করেছে যা এখনো অব্যাহত আছে বলে বিআইডব্লিউটিএ এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রায় ২শ` ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৫ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এক কোটি কিউবিক ঘন মিটার মাটি খনন ও খননকৃত চ্যানেলের তলদেশে জমা হওয়া প্রায় ১৬ লক্ষ ঘনমিটার পলি রি-ড্রেজিং-এর মাধ্যমে অপসারণ করার কথা। বর্তমানে বিআইডব্লিউটি-এর ৭টি এবং বেসরকারি ৩টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে খনন কাজ অব্যাহত রয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, খননের বিষয় নিয়ে আমরা খুব হতাশ। চ্যানেলটি প্রথমে যেভাবে খনন শুরু হয়েছে সেটি খুবই ত্রুটিপূর্ণ। কারণ চ্যানেল খননের পূর্বেই প্রভাবশালীদের দখলে থাকা নদী খাল দখলমুক্ত করে অবৈধ বাঁধ ও পলি অপসারণ করে জোয়ারাধার বা জোয়ার অববাহিকার বিষয়টি নিশ্চিত জরুরি ছিল। আমরা হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ শুধু খনন করেই চলেছে কিন্তু শাখা নদী ও শাখা খাল প্রবাহমান না থাকায় কাঙ্খিত ফল মিলছে না। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নদীর পাশের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও নদী খননের দাবি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মফিদুল ইসলাম, কনসেন্স নির্বাহী পরিচালক সেলিম বুলবুল, সমাজ সেবক আলহাজ্ব মহিউদ্দিন আহমেদ, খুলনা পোল্ট্রি ফিস ফিড শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সোহরাব হোসেন, ব্লাস্টের অশোক কুমার সাহা, মাসাসের নির্বাহী পরিচালক শামীমা সুলতানা শীলু, নাগরিক আন্দোলনের নেতা সাইদুর রহমান পিন্টু, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সমন্বয়কারী অ্যাড. হামিদা লায়লা খান, অ্যাড. কামরুজ্জামান বেবী, প্রশিকার বাকের আহমেদ, কবি রুহুল আমিন,  জনউদ্যোগ, খুলনার সদস্য সচিব মহেন্দ্র নাথ সেন, শেখ মো. জুয়েল প্রমুখ।আলমগীর হান্নান/এমজেড/আরআইপি

Advertisement