জাতীয়

‘কপ-২৬ এর ফলাফল ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য হতাশাজনক’

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শেষ হয়েছে কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলন। কিন্তু এই সম্মেলন থেকে যে ধরনের সিদ্ধান্ত আসার কথা ছিল তা হয়নি, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য হতাশাজনক বলে উল্লেখ করেছেন নাগরিক সমাজ সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

Advertisement

তাদের মতে, এ সম্মেলনে অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য অর্থায়নের বিষয়, বিশেষ করে অভিযোজন এবং ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নেই। ফলে এসব দেশের অভিযোজন কার্যক্রম এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে ‘কপ-২৬ এর ফলাফল এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে এ অভিমত ব্যক্ত করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশের (ইক্যুইটিবিডি) সমন্বয়কারী সৈয়দ আমিনুল হক বলেন, কপ-২৬ এর কাছে বিশ্বব্যাপী গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো, অভিযোজন কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্য এবং ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অধিকতর অর্থায়নের জোর প্রত্যাশা ছিল। আশা করা হয়েছিল এসব ক্ষেত্রে উপযুক্ত অর্থায়নের জন্য বিশ্ব নেতারা সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত এবং পদক্ষেপ নেবেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রদের বিরোধিতার কারণে এটি ঘটেনি।

Advertisement

২০৫০ সালের মধ্যে ‘নেট জিরো ইমিশন’ লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কিত যুক্তরাজ্যের অবস্থানের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, এটি প্রকৃতপক্ষে বড় নির্গমনকারীদের ‘শূন্য নির্গমন’র পরিবর্তে তাদের গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করে। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নিজস্ব অর্থায়নের কৌশলসহ ‘শূন্য নির্গমন’ লক্ষ্যমাত্রার জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, কপ-২৬ এর ফলাফল আসলেই হতাশাজনক। সিদ্ধান্তগুলো সামগ্রিকভাবে প্যারিস চুক্তির (সাধারণ কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্ব) নীতিকে ভেঙে দিয়েছে। বাস্তুচ্যুতিসহ অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ক্ষতির বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর টিকে থাকার বিষয়ের বদলে তারা নানা ধরনের ব্যবসায়িক ধাঁচের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, কপ-২৬ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জোরালো ভূমিকার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি সম্মেলনের বিভিন্ন আলোচনায় সরকারি প্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. মোস্তফা সরোয়ার বলেন, প্রস্তাবিত ‘নেট জিরো ইমিশন’ লক্ষ্যমাত্রা একটি মিথ্যা এবং চাতুর্যপূর্ণ সমাধান প্রস্তাব। যুক্তরাজ্য দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এই লক্ষ্য গ্রহণের জন্য চাপ দিচ্ছে, যা প্রকৃতপক্ষে একটি কার্বন ঔপনিবেশিকতার দিকে চলে যাচ্ছে।

Advertisement

বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, কয়লা ব্যবহার ও বিকল্প জ্বালানি বিষয়ে সরকারের অবস্থানের মধ্যে অসামঞ্জস্য রয়েছে।

এসএম/জেডএইচ/জিকেএস