দেশজুড়ে

প্রচারণায় বাঁশির বিকট আওয়াজ, অতিষ্ঠ মানুষ

চারদিকে ভুঁ ভুঁ শব্দ। যে যেভাবে পারছেন সেভাবেই হাতে বিশেষ ধরণের বাঁশি বাজিয়ে নির্বাচনী মিছিলে অংশ নিচ্ছেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, হাসপাতালের রোগীসহ সাধারণ মানুষ বাঁশির শব্দে অতিষ্ঠ।

Advertisement

অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে সুনামগঞ্জ সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার ১৭ ইউনিয়নের প্রার্থীরা নির্বাচনী-প্রচারণায় উচ্চ শব্দের বাঁশি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। প্রার্থীদের এ ধরনের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন সাধারণ ভোটাররা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে সদর উপজেলার নয় ইউনিয়ন ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় আট ইউনিয়নে ভোটগ্রহণের কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে সব ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্বাচনী প্রতীক পেয়ে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রথম থেকেই তারা মিছিল সহকারে বাঁশি বাজিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাঁশির উচ্চ শব্দ শিশু-বয়স্কদের জন্য মারাত্মক ক্ষতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ৪৫-৬০ ডেসিবলের বেশি শব্দ মানুষের জন্য ক্ষতিকর। ৮-১০টা ভুভুজেলা বাঁশি যদি একসঙ্গে বাজে তাহলে ৯০-১০০ ডেসিবল শব্দ তৈরি হয়। যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

প্রবীণ ভোটার আবুল হোসেন বলেন, আইয়ুব খানের আমল থেকে নির্বাচন দেখে আসছি। জীবনে এমন বিকট শব্দে বাঁশি বাজিয়ে প্রচারণা দেখিনি। এসব বন্ধ করা দরকার।

রহমত আলী নামের আরেক ভোটার বলেন, অনেক নির্বাচন দেখেছি কিন্তু এরকম বাজে বাঁশির শব্দ কোনো নির্বাচনে দেখিনি। বাঁশি বাজালে তরতর করে শরীর কেঁপে ওঠে।

স্থানীয় দরগাপাশা ইউনিয়ন (ইউপি) পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান দোলন বলেন, শব্দ দূষণ করা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। আমাদের কর্মী-সমর্থকদের এমন বাঁশি না বাজানোর জন্য কড়া নিষেধ করেছি। মানুষকে কষ্ট দিয়ে এমন বাঁশি বাজানোর কোনো মানে হয় না।

Advertisement

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের ডা. সৈকত দাশ বলেন, উচ্চস্বরে বাঁশি বাজালে রক্তচাপ, কণ্ঠনালীর প্রদাহ, আলসার, মস্তিষ্কের রোগ, কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস, খিটখিটে মেজাজ, ক্রোধ প্রবণতা, রক্তনালীর সংকোচন ও হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য খুবই ক্ষতিকর এসব শব্দ।

এ বিষয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, এসব বাঁশি নিষিদ্ধ। এটা নিশ্চিতভাবে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। এ বিষয়ে কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লিপসন আহমেদ/আরএইচ/এএসএম