জাতীয়

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শ্যালিকার শিশু সন্তানকে হত্যা

রাজধানীতে প্রায় দুই বছর আগে শিশু সানি (৫) হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটনসহ মূল আসামি চাঁন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্যালিকার শিশু সন্তানকে হত্যা করেন চাঁন মিয়া।

Advertisement

বুধবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর পল্টনে বিএনপি পার্টি অফিসের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি মতিঝিল বিভাগ।

বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও ডিবিপ্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, শিশু সানি ১০১৯ সালের ৯ নভেম্বর রাতে নিখোঁজ হয়। তার মা ঝর্ণা বেগম ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে পরদিন সকালে তার বোনজামাই চাঁন মিয়াকে বিষয়টি জানায়। ১০ নভেম্বর রাতে পল্টন মডেল থানা এলাকায় পুলিশ বক্সের সামনে থেকে শিশু সানির বস্তাবন্দি মরদেহ পাওয়া যায়। পরে সানির মা চাঁন মিয়ার সহায়তায় ল্যাংড়া রাসেল, পিন্টু, জুয়েল, কালাম, পায়েল ও হীরার নামে পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা করে।

Advertisement

ঘটনার আগের দিন রাতে চাঁন মিয়া শিশু সানিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন উল্লেখ করে ডিবিপ্রধান বলেন, ঘটনার দিন ৯ নভেম্বর বিকেলে ফুটপাত থেকে ৬০ টাকা দিয়ে একটি যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট কেনে চাঁন মিয়া। সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্টেডিয়াম এলাকা থেকে ৫০ টাকা দিয়ে পাঁচটি ঘুমের ওষুধ কেনে সে। এরপর জুসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিশু সানিকে খাইয়ে দেয়।

তিনি বলেন, কিছুক্ষণ পর সানিকে গুলিস্তান পার্ক এলাকায় নির্জন স্থানে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করা হয়। এসময় সানির গলা টিপে ধরে রাখলে সানির মৃত্যু ঘটে। পরে চাঁন মিয়া নিজেই মরদেহ বস্তাবন্দি করে রাতে পুলিশ বক্সের সামনে ফেলে যায়। পরদিন সানির মরদেহ পাওয়ার বিষয়ে সানির মাকে খবর দেওয়ার মিথ্যা নাটক করে চাঁন মিয়া।

ডিবিপ্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার আরও বলেন, গ্রেফতার চাঁন মিয়ার জীবিকা নির্বাহের নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। চুরি-ছিনতাই করাই ছিল তার মূল পেশা। এসব কাজ করতে গিয়ে ল্যাংড়া রাসেল গ্রুপের সঙ্গে তার শত্রুতা তৈরি হয়। এই শত্রুতার জেরে ল্যাংড়া রাসেলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য সে বেছে নেয় নিজ শ্যালিকার পাঁচ বছরের শিশু ছেলে সানিকে। তাকে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে নাটক সাজিয়ে মামলা দেওয়া হয় ল্যাংড়া রাসেলসহ অন্যদের বিরুদ্ধে।

মামলাটির তদন্তের পর এসব ভয়ানক তথ্য বের হয়ে আসে বলেও জানান ডিবিপ্রধান।

Advertisement

টিটি/এমআরআর/এএসএম