ক্যাম্পাস

‘বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ভেতর থেকে শক্তিশালী’

দেশের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক গতিশীলতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, অর্থায়নের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক, সামাজিক এবং দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা- এই তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। কোভিড চলাকালেও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন, শিল্পখাতের উন্নয়ন, গ্রামীণ অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, অর্থনীতির ডিজিটালাইজেশনসহ অর্থনীতির সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এজন্য বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন ভেতর থেকে শক্তিশালী হয়েছে এবং বৈদেশিক ঋণ নির্ভরশীলতা কমেছে।

Advertisement

সোমবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনের ৪০১ নং কক্ষে ‘ইন সার্চ অব সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ফর ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র এর আয়োজন করে।

কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের সভাপতিত্ব ও পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অনারারি অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও অর্থনীতিবিদ ড. মাশরুর রিয়াজ। সেমিনারে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষক অংশ নেন।

মূল প্রবন্ধে আতিউর রহমান বলেন, করোনাকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল অনিশ্চিত। কেননা এসময় বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে, আবার অনেক দেশে তা বেড়েছে। এই মহামারিতে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনাকালে মানুষ ঘরে আবদ্ধ ছিল। এর ফলে অর্থনীতির চাকা ধীর ছিল। এসময় যে দেশের মানুষ ঘরের বাইরে যাওয়ার সুবিধা পেয়েছে, সে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কেননা দেশের মানুষের ঘরের বাইরে বেরোনোর ওপর প্রবৃদ্ধি নির্ভর করে। এজন্য ভ্যাকসিনেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর ফলে করোনাকালে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে জিডিপি বেশি।

Advertisement

বর্তমানে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি সামঞ্জস্যপূর্ণ উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ এখন ৪৪ বিলিয়ন। এটি বাংলাদেশের শক্তি। এর ফলে এই করোনা মহামারিতেও বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। তবে আমাদের ‘রেভিনিউ’ এবং ‘ট্যাক্স’ আরও বেশি আসলে হয়তো রিজার্ভের টাকায় হাত দিতে হতো না। তাই আমাদের দেশের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক গতিশীলতা বাড়াতে হবে।

এসময় ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, অর্থায়নের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক, সামাজিক এবং দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা- এই তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। কোভিড চলাকালেও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল।

প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং এর ওপর আলোচনা শেষে শিক্ষক, গবেষক এবং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অধ্যাপক আতিউর রহমান।

সভাপতির বক্তব্যে জিয়া রহমান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের এক রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।

Advertisement

আর-সাদী ভূইয়া/ইএ/এএসএম