পুরুষদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যানসার হলো প্রোস্টেট ক্যানসার। পুরুষদের প্রোস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সারকেই বলা হয় প্রোস্টেট ক্যানসার। ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
Advertisement
এ ছাড়াও পারিবারিক ইতিহাস বা জেনেটিক কারণেও এই ক্যানসারে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। একে নীরব ঘাতকও বলা হয়।
শুধু পুরুষদেরই প্রস্টেট গ্রন্থি আছে। এর আকার অনেকটা কাজুবাদামের সমান। এর মধ্য দিয়েই মূত্র ও বীর্য প্রবাহিত হয়। এই গ্রন্থির মূল কাজ হচ্ছে বীর্যের জন্য কিছুটা তরল পদার্থ তৈরি করা।
কোনো কারণে যদি প্রস্টেট বড় হয়ে যায়, তাহলে মূত্রনালীর মুখ সংকুচিত হয়ে আসে। ফলে মূত্র বের হতে সমস্যা হয়। সাধারণত প্রস্টেটর তিন ধরনের সমস্যা দেখা যায়-
Advertisement
সাধারণ প্রসারণ, প্রস্টেটের প্রদাহ (একে প্রস্টাইটিসও বলে) ও প্রস্টেট ক্যানসার। এই সবগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত একই রকম লক্ষণ দেখা যায়।
প্রোস্টেক ক্যানসারের লক্ষণ
>> ঘনঘন প্রস্রাবের চাপ, বিশেষ করে রাতের বেলায়।>> প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া>> প্রস্রাব করতে সময় লাগা>> প্রস্রাব করার পরেও চাপ ধরে থাকা>> পিঠের নিচের দিকে ব্যথা>> লিঙ্গোত্থানে সমস্যা>> নিতম্ব বা তার আশেপাশে ব্যথা>> বীর্য কিংবা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া>> অন্ডকোষে ব্যথা ইত্যাদি।
এসব লক্ষণ বা উপসর্গগুলোর মধ্যে এক বা একাধিক যদি আপনার মধ্যে দেখা যায় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রস্টেট ক্যানসারের প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।
Advertisement
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. সোরোস রাইস বাহরামি জানান, ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। এই ক্যান্সার নির্ধারণের মূল হাতিয়ার হলো, পিএসএ টেস্ট বা প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন টেস্ট।
অধ্যাপক বাহরামি আরও জানান, এসব রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রস্টেট ক্যান্সার নির্ধারণ করা হয়। রক্তে পিএসএর মাত্রা সাধারণত ১ থেকে ৪-এর মধ্যেই থাকে। তবে কারও রক্তে পিএসএর মাত্রা ৪-এর বেশি হওয়া মানেই যে তিনি প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত।
যেসব খাবার ঝুঁকি বাড়ায়
এক গবেষণার তথ্যমতে, অতি পুষ্টিকর কিছু খাবারও বাড়াতে পারে এ রোগের ঝুঁকি। কিছুদিন ধরেই চলছিল ক্যানসারের ক্ষেত্রে খাদ্যের প্রভাব নিয়ে গবেষণা। ক্যানসার রোধে কোলিনের ভূমিকা নিয়ে হয়েছে অনেক চর্চা।
দেখা গেছে, খাদ্যের কোনো উপাদান অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরে গেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য হতে পারে ক্ষতিকর। শরীরের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কোলিন চলে গেলে প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে প্রস্টেট ক্যানসারের আশঙ্কা।
কোলিন সবচেয়ে বেশি থাকে ডিম, দুধ ও মাংসে। যা পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে অন্যতম। তবে এসব খাবারে অনেকটা পরিমাণ কোলিন থাকে। একেকটি ডিমে ১৫০ মিলিগ্রামের মতো কোলিন থাকে।
এদিকে গবেষণা বলছে, সারাদিনে শরীরে ৪৫০ মিলিগ্রামের বেশি কোলিন প্রবেশ করলে তা বিপজ্জনক। তার মানে দিনে একটি ডিম খেলেই প্রতিদিনের কোলিনের প্রয়োজনীয়তা অনেকটা মিটে যায়।
তবে দীর্ঘদিন ধরে দুধ, ডিম ও মাংসের মতো কোলিনসমৃদ্ধ খাবার অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।
সূত্র: বিবিসি/হেলথলাইন/জি নিউজ
জেএমএম/জিকেএস