নাক ও কান ছিদ্র করতে ছোট থেকে সবাই কমবেশি পার্লারে যান। তবে জানেন কি, পার্লারে গিয়ে নাক-কান ফোঁড়ানো হতে পারে মারাত্মক বিপদের কারণ।
Advertisement
এর থেকে শরীরে প্রবেশ করতে পারে হেপাটাইটিস সি ভাইরাস। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে ধীরে ধীরে লিভার কার্যক্ষমতা হারায়। কারণ ভাইরাসটি লিভারে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন’র বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল এ বিষয়ে বলেন, ‘সেলুনে কিংবা পার্লারে ব্যবহৃত সুঁই বা গানশট কিংবা ধারালো কাঁচি-রেজারের মাধ্যমেও হেপাটাইটিস সি ভাইরাস রক্তের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।’
তিনি আরও জানান, হেপাটাইটিস সি ভাইরাস লিভারের নানা রোগের জন্য দায়ী। পার্লার বা সেলুনের বিভিন্ন সুঁই-কাচি অনেকের শরীরেই ব্যবহার করা হয়। ফলে যদি হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির শরীরের রক্ত ওই যন্ত্রে লেগে যায়, তাহলে সেটি পরিষ্কারের পরও থাকে ভাইরাসটি।
Advertisement
‘পরবর্তীতে যখন ওই যন্ত্র দিয়ে অন্য কারও শরীর ছিদ্র করা হয় সেক্ষেত্রে হেপাটাইটিস সি ভাইরাস সহজেই অন্যের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তাই পার্লারে গিয়ে নাক-কান ফোঁড়ানোর বিষয়ে এখনই সচেতন হন। না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক বিপদ। এমনকি ট্যাটু করার বিষয়েও সতর্ক থাকুন।’
১৯৭৪ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্যে এ বিষয়ে অন্তত ১২টি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। বডি পিয়ার্সিংয়ের কারণে ভাইরাল হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে বলে জানা যায় এসব গবেষণা থেকে। ১২টির মধ্যে ৬টি গবেষণায় দেখা গেছে, হেপাটাইটিস সেরোপোসিটিভিটি উল্লেখযোগ্যভাবে কান ছিদ্রের সঙ্গে যুক্ত।
হেপাটাইটিস থেকে মুক্তি পেতে ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল পরামর্শ দেন এইচবিএসএজি স্ক্রিনিং ও টিকা নেওয়া জরুরি। একই সঙ্গে সচেতন হওয়াও জরুরি।
প্রসঙ্গত, লিভারে ৬ মাসের বেশি কোনো রোগ যখন বাসা বাঁধে তখন সেটি দীর্ঘমেয়াদী হেপাটাইটিস। এর মধ্যে আছে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস, ফ্যাটি লিভার, হেপাটাইটিস সি ভাইরাস।
Advertisement
এসব রোগ লিভারের নানা রোগের কারণ হতে পারে। ফলে লিভারের আকার-আকৃতি নষ্ট হয়ে যায় ও এটি কার্যক্ষমতা হারায়। এক পর্যায়ে ক্যানসারও হতে পারে।
জেএমএস/জেআইএম