ভ্রমণ

দেশেই কাঞ্চনঝঙ্ঘা দেখতে যেভাবে যাবেন

কাঞ্চনজঙ্ঘা ভারতের অন্যতম এক সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। ১৮৫২ সালের আগে পৃথিবীর সৰ্বোচ্চ শৃঙ্গ বলেই ধারণা করা হত কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া। ৮ হাজার মিটারেরও (২৬ হাজার ফুট) অধিক উচ্চতা এই পর্বতের।

Advertisement

৫টি পর্বতচূড়ার কারণে একে ‘তুষারের ৫টি ঐশ্বৰ্য’ বলা হয়। সিকিম ও দার্জিলিংয়ের স্থানীয়রা এই পর্বতকে পবিত্র বলে মনে করায় পূজা করেন। সর্বোচ্চ উচ্চতার এই দৈত্যাকার পর্বতের দেখা পেতে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটকরা ভিড় জমান সেখানে।

তবে মজার বিষয় হলো, ভারতে না গিয়েই আপনি বিষ্ময়কর কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শন পাবেন দেশেই। হিমালয় পর্বতমালার কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে বেড়িয়ে পড়তে পারেন ঠাকুরগাঁও কিংবা পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে। শুধু পঞ্চগড় নয় ঠাকুরগাঁও থেকেও এর দর্শন মেলে।

ভারতের সিকিম ও নেপালের সীমান্তাঞ্চলে অবস্থিত এ পর্বতের চূড়া অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ে দেখা যায়।

Advertisement

খুব ভোরে অর্থাৎ সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যেই দৃশ্যমান হয় কাঞ্চনঝঙ্ঘার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। প্রতিবছরই শীত এলে হিমালয়ের এই পর্বতশৃঙ্গের দেখা মেলে। তবে প্রতিদিনই যে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলবে তা কিন্তু নয়।

স্থানীয়দের মতে, সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে এর দেখা মেলে। সকাল ১০টা পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই দেখা যায়। তারপর ধীরে ধীরে ঝাপসা হয় পর্বতের দৃশ্য। আবার শেষ বিকেলে যখন সূর্যকিরণ তির্যক হয়ে পড়ে বরফের পাহাড়ে তখন অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা।

কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য অনেক পর্যটকই এ সময় ভিড় জমান ঠাকুরগাঁও জেলায়। তবে আকাশে মেঘ বা কুয়াশা থাকলে অনেক সময় নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে হয় দর্শনার্থীদের। কেবল মেঘও ও কুয়াশামুক্ত আকাশ থাকলেই দেখা দেয় কাঞ্চনঝঙ্ঘা।

কীভাবে যাবেন ও কোথায় থাকবেন?

Advertisement

ঢাকা থেকে পঞ্চগড় বা তেঁতুলিয়া অথবা বাংলাবান্ধায় যেতে পারেন দূরপাল্লার কোচে। ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা বা দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে যেতে পারেন পঞ্চগড়।

এরপর পঞ্চগড় থেকে বাস, মাইক্রোবাস, কার বা যে কোনো যানবাহনেই পৌঁছাতে পারবেন তেঁতুলিয়া উপজেলায়।

তেঁতুলিয়া জেলা পরিষদের দুটি ডাকবাংলো আছে। উপজেলা প্রশাসনের পিকনিক কর্নার ও বেরং কমপ্লেক্স নামে দুটি আবাসন আছে।

এ ছাড়াও উপজেলা সদরে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বেশ কয়েকটি হোটেল গড়ে উঠেছে। ডাকবাংলে থাকতে চাইলে আগে থেকে বুকিং দিতে হবে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের বুড়িরবাঁধ এলাকা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা চূড়া দেখতে পারবেন।

কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়াও আরও যা দেখবেন

কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়াও পঞ্চগড়ে আরও দেখতে পাবেন সবুজের নৈসর্গ সমতল ভূমির চা বাগান। সীমান্ত নদী মহানন্দার পাড়ে বসে সূর্যাস্ত দর্শন, মোঘল আমলের স্থাপত্য মির্জাপুর শাহী মসজিদ, বার আউলিয়ার মাজার, গোলকধাম মন্দির, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট।

এ ছাড়াও দেশের একমাত্র পাথর সমৃদ্ধ পাথরের জাদুঘর রকস ‘রকস্ মিউজিয়াম’, জেমকন গ্রুপের কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের আনন্দ ধারা, শিশুপার্কেও ঘুরে আসতে পারেন।

একই সঙ্গে দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন ভিতরগড় দুর্গনগরী ও ১৫০০ বছরের পুরাতন সুবিশাল মহারাজার দীঘি, ভূগর্ভস্থ ও নদী থেকে পাথর উত্তোলন দেখলে পর্যটকদের চোখ জুড়িয়ে যাবে।

জেএমএস/জিকেএস