জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে রাজধানীর বনানীতে দ্য রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার রায়ে বিচারকের দেওয়া পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম (জেডআই) খান পান্না।
Advertisement
তিনি বলেছেন, একটি ধর্ষণ মামলায় আদালত আসামিকে খালাস করে রায় দিয়েছেন সেটি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। তবে একটা বিষয়ে আমি খুবই মর্মাহত। রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে আমার একটু প্রশ্ন, কিভাবে একজন বিচারক বলেন, ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর পুলিশকে মামলা না নেওয়ার জন্য? উনি (বিচারক) এটা বলতে পারেন না।
রায়ের পর্যবেক্ষণ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেছেন।
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ৭২ ঘণ্টা পরে কেন, যখন নালিশ দেবে, তখনই মামলা নিতে হবে। মেয়েটিকে যদি তুলে নিয়ে আটকে রাখা হয়?
Advertisement
জেড আই খান পান্না রায় প্রদানকারী বিচারকের উদ্দেশে বলেন, আপনি বিচার করবেন কি করবেন না, সেটি আপনার ইচ্ছা। কিন্তু পুলিশ মামলা নিতে বাধ্য। এ নিয়ে উচ্চ আদালত হাইকোর্টের একটি রায় রয়েছে। আপনি কি হাইকোর্টের রায় মানেন না?
বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে খালাস প্রদান করেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নেওয়ার জন্য পুলিশকে পরামর্শ দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, মামলার দুই ভিকটিম আগে থেকেই সেক্সুয়াল কাজে অভ্যস্ত। তারা স্বেচ্ছায় হোটেলে গিয়েছেন। সেখানে গিয়ে সুইমিং করেছেন। ঘটনার ৩৮ দিন পর তারা বললেন, ‘আমরা ধর্ষণের শিকার হয়েছি’। অহেতুক তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রভাবিত হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন। এতে আদালতের ৯৪ কার্যদিবস নষ্ট হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া এরপর থেকে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর যদি কেউ মামলা করতে যায় তা না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
Advertisement
এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আসামিরা বলেন, আদালতের মাধ্যমে সত্যের জয় হয়েছে। রায় শুনে কাঠগড়ায় থাকা পাঁচ আসামি বলেন আলহামদুলিল্লাহ। এরপর তারা বিচারককে উদ্দেশ করে হাত তুলে বলেন, আসসালামু আলাইকুম।
এফএইচ/এমএইচআর/এএসএম