কাজী আরিফ বিল্লাহ
Advertisement
প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা ও গাজীপুর-২ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসানউল্লাহ মাস্টারের আজ ৭১তম জন্মদিন। ১৯৫০ সালের এ দিনে তিনি গাজীপুরের হায়দরাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ভাওয়াল বীর রাজনীতির শুদ্ধ পুরুষ নন্দিত জননেতা শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্যারের শুভ জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। কায়মনে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
আদর্শের কখনো মৃত্যু হয় না। গাজীপুরের মাটি ও মানুষের প্রিয় নেতা শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্যার আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু রয়েছে তার কর্ম, তার জীবনাদর্শ। তিনি ছিলেন সৎ, নির্লোভ নিরহংকার একজন নীতিবান মানুষ। তিনি সারাজীবনই সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার ছিলেন। মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ায় তাকে অকালে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছিল। তবে তিনি বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন মানুষের অন্তরে। ১৯৬৬-র ছয় দফা, ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচন, ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সব আন্দোলন সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আহসানউল্লাহ মাস্টার স্যার সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ভারতের দেরাদুনে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। অতপর তিনি মুজিব বাহিনীতে যোগদান করেন এবং পাক আর্মির বিরুদ্ধে একাধিক সফল অপারেশন পরিচালনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতস্বরূপ দেশ স্বাধীনের পর তাকে ভালো চাকরির সুযোগ দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। তিনি শিক্ষকতার মতো মহান পেশা বেছে নিয়েছিলেন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের সফল সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় এ নেতাকে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২১ এ ভূষিত করা হয়। শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্থান ও কালোত্তীর্ণ একজন মানুষ। ভাবতে অবাক লাগে, তিনি ছিলেন একাধারে বরেণ্য রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আদর্শ শিক্ষক। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন অকুতোভয় সৈনিক। তিনি কখনোই অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির কাছে মাথা নত করেননি। গভীর দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা আর সামাজিক মূল্যবোধ এ তিনটি বিরল গুণের অভূতপূর্ব সম্মিলন ঘটেছিল আমাদের সবার প্রিয় আহসানউল্লাহ মাস্টার স্যারের চরিত্রে।
Advertisement
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন ও আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সেই স্বপ্ন ও আদর্শের ধারক ও বাহক ছিলেন শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার। বঙ্গবন্ধুর মতোই তিনি কখনো ভাবতেই পারেননি তাকে হত্যা করা হতে পারে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, তাকে নির্মমভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হয়েছে। তাই তার রেখে যাওয়া আদর্শ ও কর্মকে বুকে ধারণ করে দেশসেবায় আমাদের আত্মনিয়োগ করতে হবে।
লেখক : জনসংযোগ কর্মকর্তা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
এইচআর/এমএস
Advertisement