এ বছর ৩০ নভেম্বর আয়কর করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। ২০২১-২২ করবর্ষ ও ২০২০-২১ আয় বর্ষের আয়কর (অর্থাৎ ১ জুলাই ২০২০-থেকে ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত সময়ের আয়ের জন্য) উক্ত তারিখের মধ্যে জমা দিতে পারবেন। এ বছর করোনার কারণে মেলা হচ্ছে না।
Advertisement
আয়কর আইন সংশোধন করার পরিপ্রেক্ষিতে যাদের টিআইএন আছে (যারা ৩০ জুন ২০২১-এর আগে টিআইএন গ্রহণ করেছেন), তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। গত বছর ৫০ লাখের বেশি টিআইএনধারী করদাতার মধ্যে ২২ থেকে ২৩ লাখ আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন। আয়কর ফাইল একজন করদাতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
যেভাবে আয়কর রিটার্ন জমা দিবেন-
দুই শ্রেণির ব্যক্তিকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এক. যাদের করযোগ্য আয় আছে এবং দুই. যাদের আবশ্যিকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। আপনি এর মধ্যে হলে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে আপনাকে। প্রত্যেক শ্রেণির করদাতার রিটার্ন দাখিলের জন্য আয়কর সার্কেল নির্ধারণ করা আছে।
Advertisement
সকল বেসামরিক সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী ও পেনশনভূক্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীর নাম শুরু হয়েছে তাদের কে নির্দিষ্ট অঞ্চলের নির্দিষ্ট সার্কেলে রিটার্ন জমা দিতে হবে। পুরোনো করদাতারা তাদের বর্তমান সার্কেলে রিটার্ন জমা দিবেন।
নতুন করদাতারা তাদের নাম, চাকরিস্থল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানার ভিত্তিতে নির্ধারিত সার্কেলে ১২ সংখ্যার ই-টিআইএন উল্লেখ করে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। করদাতারা প্রয়োজনে কাছাকাছি আয়কর অফিস বা কর পরামর্শ কেন্দ্র থেকে আয়র রিটার্ন দাখিল করার সার্কেল সম্পর্কে জানতে পারবেন।
প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত আয়কর মেলায় করদাতাগণ আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। রিটার্ন দাখিলের সময় করদাতা বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসেও রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।
সব আয়কর অফিসে আয়কর রিটার্ন ফরম বিনামূল্যে পাওয়া যায়। অনলাইনেও আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট www.nbr.gov.bd থেকেও আয়কর রিটার্ন ফরম ডাউনলোড করা যায়। আয়কর রিটার্নের ফটোকপিও গ্রহণযোগ্য।
Advertisement
ব্যক্তি করদাতাকে কর দিবসের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। ২০২০-২০২১ কর বছরের জন্য ৩০ নভেম্বর, ২০২০ তারিখ হচ্ছে কর দিবস, অর্থাৎ আয়কর রিটার্ন দাখিলের সর্বশেষ তারিখ। একজন ব্যক্তি করদাতা ৩০ নভেম্বর ২০২০ তারিখের মধ্যে ২০২০-২০২১ কর বছরের জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা সম্ভব না হলে করদাতা রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য বিধি নির্ধারিত ফরমে উপযুক্ত কারণ উল্লেখপূর্বক উপ-কর কমিশনারের কাছে সময়ের আবেদন করতে পারেন।
সময় মঞ্জুর হলে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন ডাউনলোড করা যায়।
আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে করদাতা কিছু অসুবিধায় পরতে পারেন। আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ৭৫ ধারা অনুসারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে তার উপর আয়কর অধ্যাদেশ এর ১২৪ ধারা অনুযায়ী জরিমানা, ৭৩ ধারা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সরল সুদ, এবং ৭৩ক ধারা অনুযায়ী বিলম্ব সুদ আরোপযোগ্য হবে।
যেক্ষেত্রে করদাতা রিটার্ন দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করে উপ-কর কমিশনার কর্তৃক মঞ্জুরকৃত বর্ধিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করবেন, সেক্ষেত্রে করদাতার উপর জরিমানা আরোপ হবে না, তবে অতিরিক্ত সরল সুদ ও বিলম্ব সুদ আরোপিত হবে।
কেএসকে/জিকেএস