রাজধানীর গাবতলী বাস কাউন্টারগুলোতে দূরপাল্লার পরিবহনে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে টিকিট বিক্রি করতে দেখা গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও দেখার যেন কেউ নেই। তবে, বাড়তি ভাড়া আদায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এ নৈরাজ্য বন্ধে সরকারের মনিটরিং দরকার বলে মনে করছেন যাত্রীরা। এ জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
Advertisement
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সরেজমিনে গাবতলী দূরপাল্লার বাস কাউন্টারে দেখা গেছে, সরকারি নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যার কাছে যেভাবে পারছে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কাউন্টারগুলো তো এক ধরনের মাছ বাজারে পরিণত হয়েছে। দু'একটি কাউন্টারের সামনে নতুন ভাড়ার চার্ট টাঙানো থাকলেও অধিকাংশ কাউন্টারে দেখা যায়নি। ভাড়ার তালিকা না থাকায় ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।
ফরিদপুর যেতে সৌখিন পরিবহন থেকে ৩০০ টাকার টিকিট ৪০০ টাকায় কিনেছেন খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, ফরিদপুরের টিকিট প্রথমে ৫৫০ টাকা চেয়েছিল, দামাদামি করে সেটি ৪০০ টাকায় নিয়েছি। অথচ সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়া অনুযায়ী ফরিদপুরের ভাড়া আসে ৩৮০ টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৌখিন পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা বলেন, মালিক যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে সেভাবেই দাম রাখা হচ্ছে।
Advertisement
কুষ্টিয়া যেতে সোহাগ নামে এক ব্যক্তি গ্রীন এক্সপ্রেস পরিবহনের টিকিট কাউন্টার থেকে ৪০০ টাকার টিকিট কিনেছেন ৫৫০ টাকায়। নিয়মিত সোহাগ পরিবহনে যাতায়াত করেন বলে বাড়তি ভাড়া দিয়ে টিকিট কিনেছেন তিনি।
গ্রীন এক্সপ্রেসের টিকিট বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়ার চাইতে কম রাখা হয়েছে। নতুন তালিকা অনুযায়ী ৬০০ টাকার বেশি ভাড়া আসে বলেও জানান তিনি।
উত্তরবঙ্গের চলাচল করা পরিবহন এস আলম কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা সুজিত বলেন, নতুন চার্ট অনুযায়ীই বাসের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।
পাশেই শ্যামলী পরিবহন থেকে কুষ্টিয়া যেতে ৫৫০ টাকায় টিকিট দিয়েছেন আব্দুল হাকিম। টিকিটের গায়ে ৫০০ টাকা লেখা থাকলেও ৫০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হয়েছে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে কুষ্টিয়ার বাস ভাড়া ৪০০ টাকা নিলেও এখন ৫৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
Advertisement
তিনি বলেন, প্রথমে ৬০০ টাকা চেয়েছিল, দামাদামি করে সেটি ৫৫০ টাকায় নিয়েছেন। বাড়তি ভাড়া আদায় বন্ধে তিনি সরকারের মনিটরিং বসানোর দাবি জানান।
তবে, এ কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা রাসেল জানান, ওই যাত্রী (আব্দুল হাকিম) একটি মাধ্যমে আসায় তাকে ৫০ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। তারা নতুন চার্ট অনুযায়ী নির্ধারিত দামে টিকিট বিক্রি করে থাকেন।
রাসেল জানান, নতুন ভাড়া অনুযায়ী রংপুরে ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৭০০ টাকা, বগুড়া ৩৫০ টাকার বদলে ৪৫০ টাকা, নওগাঁ ৪০০ টাকার বদলে ৫৫০ টাকা ও জয়পুরহাট ৪৫০ টাকার টিকিট ৬০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। গড়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা প্রতিটি টিকিটে বাড়ানো হয়েছে।
অন্যদিকে, চুয়াডাঙ্গার রোডে চলাচলরত ডিজি চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স, রয়েল এক্সপ্রেস, ঈগল পরিবহনের টিকিট বিক্রেতারা নির্ধারিত নতুন ভাড়া চেয়েও কম দামে টিকিট বিক্রি করছেন বলে দাবি করেন।
এমএইচএম/এমএএইচ/জেআইএম