আগামী ৩০ ডিসেম্বর সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জের তারাব ও সোনারগাঁ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে পুরোদমে প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। শেষ মূহুর্তের প্রচারণায় প্রার্থীসহ সমর্থকরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। এদিকে নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার কথা ভেবে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক, ভয় ও শঙ্কা ততই বাড়ছে।অন্যদিকে, শেষ মূহুর্তের প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনাও বাড়ছে। ঘটতে শুরু করেছে সংঘর্ষের ঘটনাও।সোনারগাঁ আর তারাব পৌরসভার নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রভাব খাটিয়ে দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের প্রচারণা দেখে অনেকের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ তাদের সমর্থকরা আতঙ্ক নিয়ে প্রচারণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে নির্বাচনী মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে তারাব পৌর নির্বাচনে এমপি গাজীর স্ত্রী মেয়র প্রার্থী হাসিনা গাজীকে যেকোনো ভাবে নির্বাচিত করবে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের এমন হুঙ্কারে বিএনপিসহ অন্য প্রার্থীরা নির্বাচন সুষ্ঠ নিরপেক্ষতা হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন। এদিকে রূপগঞ্জের তারাব পৌর নির্বাচনে এমপি গাজী গোলাম দস্তগীরের স্ত্রী মেয়র প্রার্থী হওয়ার পর থেকে নির্বাচনী হাওয়া পাল্টে গেছে। রূপগঞ্জের এমপি গাজী এককভাবে প্রভাব বিস্তার করে প্রথমে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রতিনিয়ত মহড়া দিলেও রিটার্নিং অফিসার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলে এমন অভিযোগ ছিল বিএনপি প্রার্থীর। এমনকি আচরণবিধি লঙ্ঘন স্ত্রীর পক্ষে এমপি গাজী প্রচারণা চালালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আর আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।সর্বশেষ গত ২০ ডিসেম্বর বরপায় বিএনপির প্রার্থীর উপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওইদিন বিএনপি প্রার্থী নাসিরউদ্দিনের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে করে ভোটারদের মাঝে আরো আতঙ্ক দেখা দেয়। এদিকে সোনারগাঁ পৌর নির্বাচন নিয়ে ত্রিমুখী লড়াই নিয়ে চলছে শেষ মুহুর্তে প্রচারণা। তবে মেয়র প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগ দু’ভাবে বিভক্ত হয়ে যায়। কারণ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী শামীম ওসমান ও জাতীয় পাটির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার নির্দেশে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাদেকুর রহমান সাদেককে দলীয় মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রে নাম পাঠানো হয়েছে। সাদেক বিগত নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের সমর্থিত প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু দলীয় ভাবে সাদেককে সমর্থন না দিয়ে এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর ভগ্নিপতি ফজলে রাব্বিকে সমর্থন দেয়ায় নির্বাচনের পেক্ষাপট পাল্টে যায়। আর উপজেলার একটি বিশাল অংশ দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান করেছে। তারা দিনের বেলা আওয়ামী লীগের কথা আর রাতের বেলা সাদেকের পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর বিশেষ করে সাদেকের পক্ষে শামীম ওসমানের সমর্থিত আওয়ামী লীগ নেতা সাদেকের পক্ষে কাজ করছে। এমনকি জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাসহ তার সমর্থিত লোকজন সাদেকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। উল্লেখ্য, তারাবতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নাসিরউদ্দিন এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হলেন স্থানীয় সাংসদের স্ত্রী হাসিনা গাজী। এখানে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হলেন শফিকুল ইসলাম চৌধুরী।তারাব পৌর নির্বাচনে ৪ জন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও কাউন্সিলর পদে ৫২ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া সকল প্রার্থীই তারাব পৌরসভার সবকটি ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করে আসছেন।সোনারগাঁও ও রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভার নির্বাচনে মোট ১ লাখ এক হাজার ১৩৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে তারাবতে পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৭৮ হাজার ৮৯৭, পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৪১ হাজার ৪২৯, মহিলা ভোটার সংখ্যা ৩৭ হাজার ৪৬৮। এখানে মোট কেন্দ্র ৩৭টি। বুথের সংখ্যা ২২২টি। শাহাদাত হোসেন/এমএএস/আরআইপি
Advertisement