আইন-আদালত

কুষ্টিয়ায় সাবিনা ধর্ষণ-হত্যা: শুকুর আলীর ফাঁসি কার্যকর স্থগিত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগরে কিশোরী সাবিনাকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় আসামি শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

Advertisement

তবে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আইজি ও কারা কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে আসামি শুকুর আলীর আইনি প্রক্রিয়া মেনে রিভিউ আবেদন করতে বলেছেন আপিল আদালত।

রোববার (৭ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ আসামিপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

Advertisement

আসামিপক্ষের আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘গত ১৮ আগস্ট আপিল বিভাগ শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখেন। তবে এ মামলায় অন্য তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর আপিল বিভাগের রায়ের অগ্রিম অর্ডার পেয়ে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ শুকুর আলীর ফাঁসি কার্যকরে উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদনও পাঠানো হয়।’

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন বাতিল করে দেন। তখন মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উদ্যোগের কথা আমাদের জানানো হয়। আমরা কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় ও রিভিউ আবেদন দায়ের করার কথা জানায়। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগে তো ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে না। এরপর রিভিউ আবেদনের সুযোগও আসামিকে দিতে হবে। আমি আজ আপিল বিভাগে এসব কথা বলেছি। আপিল বিভাগ শুকুর আলীর ফাঁসি কার্যকর স্থগিত রাখতে বলেছেন।’

জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগরে সাবিনা (১৩) নামের এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে আসামি শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে তিন জনকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন আপিল বিভাগ।

ওই তিন আসামি হলেন- নুরুদ্দিন সেন্টু, আজানুর রহমান ও মামুন হোসেন। তাদেরকে কনডেম সেল থেকে স্বাভাবিক সেলে স্থানান্তর করতে নির্দেশ দেন।

Advertisement

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ রাতে দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের আব্দুল মালেক ঝনুর মেয়ে সাবিনাকে (১৩) অপহরণ করে আসামিরা। পরে লালনগর ধরমগাড়ী মাঠের একটি তামাক ক্ষেতে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়।

ঘটনার পরদিন সাবিনার বাবা আব্দুল মালেক ঝনু বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলার বিচার শেষে ২০০৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দেন কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর হোসেন।

পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন। এরমধ্যে কামরুল নামের এক আসামি মারা যান। পরবর্তীতে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রাখেন। এরপর আসামিরা আপিল করেন।

এফএইচ/এএএইচ/জেআইএম