দেশজুড়ে

নাটোরে লড়াই হবে আ.লীগ-বিএনপিতে

শেষ সময়ে নাটোরের ৬টি পৌরসভা নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। সোমবার মধ্য রাত থেকে প্রচারণার সময়সীমা শেষ হওয়ায় ভোটাদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রার্থীরা। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় ভোটারদের সমীকরণও জটিল হয়ে পড়েছে। তবে ছয়টি পৌরসভাই মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে।তিনটি পৌরসভায় বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তাই বেকায়দায় রয়েছে ওই তিনটি পৌরসভার বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা। অপরদিকে, একক প্রার্থী থাকায় ক্লিন ইমেছে রয়েছে আওয়ামী লীগের ছয়টি পৌরসভার মেয়র প্রার্থীরা। নাটোর পৌরসভা :এই পৌরসভায় মোট ভোটার ৫৭ হাজার ২০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৭৯৭৮ এবং নারী ২৯ হাজার ২২৬ জন। এখানে মোট ৪ জন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। এরা হলেন- বিএনপি মনোনীত বর্তমান মেয়র এমদাদুল হক আল মামুন, আওয়ামী লীগ মনোনীত উমা চৌধুরী জলি, জাতীয় পার্টি মনোনীত আব্দুল মান্নাফ এবং ওয়াকার্স পার্টির মাহবুবুল আলম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে গণসংযোগে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উমা চৌধুরী জলি এগিয়ে রয়েছেন। কারণ নাটোর শহরে হিন্দু ভোটার সংখ্যা বেশি থাকায় তার বাক্সে ভোট যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বিগত দিনে পৌরসভায় দৃশ্যমান কাজ না করায় পিছিয়ে রয়েছে বর্তমান মেয়র ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এমদাদুল হক আল মামুন। তারপরও লড়াই হবে উমা চৌধুরী জলি এবং এমদাদুল হক আল মামুনের মধ্যে।  সিংড়া পৌরসভা : এই পৌরসভায় মোট ভোটার ২৩ হাজার ৪০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ৫৪৩ এবং নারী ভোটার ১১ হাজার ৮৮২ জন। বিএনপির বিদ্রোহীসহ মোট  ৪ জন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। মূলত বিএনপি মনোনীত বর্তমান মেয়র শামিম আল রাজির সঙ্গে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ফেরদৌসের পক্ষে সর্বস্তরের মানুষের গণজোয়ার সৃষ্টি হওয়ায় এবং গণসংযোগে তিনি এগিয়ে রয়েছেন। আর বিএনপির বিদ্রাহী প্রার্থী এমএ মালেক রানা এবং বিকল্প ধারার মোহাম্মাদ আলী, শামিম আল রাজির ভোট ভাগাভাগি করায় পিছিয়ে রয়েছেন তিনি। এছাড়া স্বতন্ত্র (জামায়াত) প্রার্থী প্রত্যাহার করার পর থেকে শামিম আল রাজির প্রচার-প্রচারণা থেকে সরে এসেছে জামায়াত। গুরুদাসপুর পৌরসভা : এই পৌরসভায় মোট ভোটার ২২ হাজার ৬১০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ২০০ এবং নারী ভোটার ১১ হাজার ৪১০ জন। এই পৌরসভায় মোট ৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। এখানে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন আমজাদ হোসেন। গতবার নির্বাচনে বিএনপি থেকে তাকে মনোনয়ন দেয়া হলেও এই বার দেয়া হয়নি। যার কারণে এবারও তিনি প্রার্থী হয়েছেন। তবে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহনেওয়াজের সঙ্গে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আমজাদ হোসেনের মধ্যে। স্থানীয়রা জানান, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মশিউর রহমান বাবলু সম্প্রতি সুজনের একটি অনুষ্ঠানে ধানের শীষে ভোট না দিলেও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীকে ভোট না দেয়ার জন্য ভোটারদের অনুরোধ জানান। সে দিক থেকে ক্লিন ইমেজে রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহনেওয়াজ। বড়াইগ্রাম পৌরসভা :এই পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছে ১২ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৪০২ এবং নারী ভোটার ৬ হাজার ৫৪১ জন। বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী শরিফুল হক মুক্তাসহ মোট ৪ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুল বারেক সরদার এবং বিএনপির ইসাহাক আলীর মধ্যে। তবে স্থানীয়রা জানান, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী শরিফুল হক মুক্তা প্রার্থী হওয়ায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন কিছুটা বেকায়দায়। গোপালপুর পৌরসভা : এই পৌরসভায় মোট ভোটার ১৫ হাজার ৭১৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৮৭৭ এবং নারী ভোটার ৭ হাজার ৮৪২ জন। এখানে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বর্তমান মেয়র বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম বিমল বিগত ৩ দফা মেয়র হিসেবে রয়েছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের রোকসানা মোর্ত্তুজা লিলি এবং বিএনপির নজরুল ইসলাম মোলাম রয়েছেন।পৌরবাসী জানান, আওয়ামী লীগের ভোট প্রচারের সমন্বয়হীনতা অভ্যন্তরীণ বিরোধ এবং বিএনপি মনােনীত প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থায় না থাকায় মূল লড়াই হবে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা বিমলের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রোখসানা মোর্ত্তজা লিলির ।  নলডাঙ্গা পৌরসভা : নাটোর জেলার সবচেয়ে ছোট পৌরসভা নলডাঙ্গা। এই পৌরসভায় মোট ভোটার ৭ হাজার ৬১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩ হাজার ৭৭৩ এবং নারী ৩ হাজার ৮৬৮ জন রয়েছে। এই পৌরসভায় জামায়াতসহ মোট ৫ জন প্রার্থী রয়েছে। তবে মূল লড়াই আওয়ামী লীগের শফির উদ্দিন মন্ডল, বিএনপির আব্বাস আলী নান্নুর সঙ্গে। রেজাউল করিম রেজা/এসএস/আরআইপি

Advertisement