ভারতে পাচারকালে ২০১৭ সালে একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী জাগুয়ার শাবক উদ্ধার করেছিল যশোর পুলিশ। পরে বন্যপ্রাণী প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ব্যবস্থাপনায় প্রাণী দুটির স্থান হয় গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। পরিসংখ্যানে থাকা তথ্য অনুযায়ী দেশের কোথাও আর জাগুয়ার না থাকায় এ দুটিই আমাদের দেশের একমাত্র জাগুয়ার দম্পতি।
Advertisement
আটক হওয়ার সময় বয়স কম থাকলেও চার বছর পর এখন তারা পূর্ণ বয়স্ক। সাফারি পার্কের চিকিৎসাকেন্দ্রের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের শিকলে ঘেরা নির্জনতার মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছে তাদের দিনগুলো।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, এ জাগুয়ার দম্পতির জন্য নির্দিষ্ট একটি এলাকায় তাদের উপযুক্ত বসবাসের স্থান তৈরি প্রক্রিয়াধীন আছে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের প্রথম দিকে দর্শনার্থীরা দেশের একমাত্র জাগুয়ার দম্পতিকে দেখার সুযোগ পাবেন।
সমস্ত পৃথিবীতে জাগুয়ারদের জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে এখন প্রায় বিপদাপন্ন অবস্থায় আছে। দক্ষিণ আমেরিকা বা আমাজন জঙ্গলের কথা আসলেই ‘জাগুয়ারের’ কথাও চলে আসে। বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ ও জাগুয়ার মূলত একই শ্রেণির প্রাণী। এরা সিংহের চেয়েও হিংস্র। এদের গায়ে গোল গোল ছোপ দাগ থাকে। দেহের গঠন চিতা বাঘের চেয়েও বড়। মুহূর্তেই গাছের মগ ডালে উঠে যাওয়ার যাদুকরী দক্ষতাও আছে প্রাণীটির। এরা শিকারে জলে-স্থলে সমান দক্ষতা দেখাতে পারে এবং এক কামড়েই শিকারকে কাবু করে দিতে পারে। গায়ানা, মেক্সিকো ও ব্রাজিলের জাতীয় পশুর স্থান দখল করে রেখেছে এই জাগুয়ার।
Advertisement
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন, জাগুয়ার একটি বিশেষ হিংস্র প্রাণী। দীর্ঘদিন ধরেই নিবিড় পরিচর্যায় এরা এখন পূর্ণবয়স্ক। এদের জন্য নির্দিষ্ট বা বিশেষ প্রক্রিয়ায় শেড দরকার। যা না থাকায় তাদের কোয়ারাইন্টাইন জোনেই রাখা হয়েছে। তবে পরিকল্পনা করা হয়েছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছর সাফারি পার্কের বাঘ বেষ্টনীর ভেতর শেড নির্মাণ করে প্রাণী দুটিকে দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত এই জাগুয়ার দম্পতিই একমাত্র। উন্মুক্ত অবস্থায় বিচরণের সুযোগ পেলে এ থেকে শাবক জন্মের ভালো সম্ভাবনা আছে। অচিরেই একটি সুসংবাদের আশা আমরা করতেই পারি।
সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মো. আনিসুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, সপ্তাহে ছয়দিন জাগুয়ার দম্পতিকে খাবার দেওয়া হয়। এদের মধ্যে পাঁচ দিন খাবার হিসেবে সাড়ে তিন কেজি করে সাত কেজি গরুর মাংস দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে প্রাণী দুটোকে সপ্তাহে একদিন অভুক্ত রাখা হয়।
এসজে/এএসএম
Advertisement