পারিবারিক একটা কাজে ময়মনসিংহে যাওয়ার জন্য মিরপুরে বাসা থেকে মহাখালী বাস টার্মিনালে যান রায়হান উদ্দিন। স্ট্যান্ডে ঘণ্টাখানেক বসে থাকার পরও তিনি কোনো বাস পাননি। পরে হতাশ হয়ে বাসায় ফিরে আসেন তিনি।
Advertisement
আলাপকালে রায়হান উদ্দিন বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সড়কে ধর্মঘট চলছে তা জানি। কিন্তু পারিবারিক একটা কাজে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া খুবই জরুরি ছিল। তাই টার্মিনালে গিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করেছি। যদি একটা বাস ছাড়ে। কিন্তু টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ময়মনসিংহ ছেড়ে যাচ্ছে না।
ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে সারাদেশে গণপরিবহন এবং পণ্যপরিবহন ধর্মঘট চলছে। এমন ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা।
তবে পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, গত বুধবার রাতে ডিজেলের মূল্য কেজিতে ৬৫ টাকা থেকে ৮৫ টাকা করা হয়েছে। এতে পরিবহন খরচ কয়েকগুণ বেড়েছে। এর প্রতিবাদেই তারা ধর্মঘট ডেকেছেন। অন্যথায় আগের ভাড়ায় বা পরিবহন চালালে মালিকদের লোকসান গুনতে হবে। এখন ডিজেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার অথবা ভাড়া বাড়ানো হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করবেন তারা। অন্যথায় ধর্মঘট চলবে।
Advertisement
শনিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাখালী বাস টার্মিনালের ভেতরে চার শতাধিক দূরপাল্লার বাস সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করে রাখা হয়েছে। এর বাইরে রাস্তায় আরও শতাধিক বাস পার্কিং করা। অধিকাংশ বাসচালক এবং তাদের সহকারীদেরকে দেখা যায়নি। অথচ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার জন্য কিছুক্ষণ পরপর টার্মিনালে যাচ্ছেন যাত্রীরা। বাস চলাচল না করায় হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন তারা।
বাড্ডা থেকে রিকশায় মহাখালী বাস টার্মিনাল এসেছেন লিয়াকত আলী দম্পতি। বাস না পেয়ে আবার বাসায় ফিরে আসেন তারা। আলাপকালে লিয়াকত আলী বলেন, ডিজেলের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। তেমনি সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করে হুটহাট ধর্মঘট ডাকা ঠিক হয়নি। তাদের এমন কাজে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন।
ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ জাগো নিউজকে বলেন, সরকার ডিজেলের দাম বাড়ানোর পরপরই তারা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিএ) ভাড়া বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু বিআরটিএ তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তারা আগামীকাল বৈঠক ডেকেছেন। ওই বৈঠকে ভাড়া বাড়ানো হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেবেন পরিবহন মালিকেরা।
এমএমএ/এমআরএম/জেআইএম
Advertisement