ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার লাখো মানুষের যাতায়াত উচাবাজার সংলগ্ন খালের উপর নির্মিত ব্রিজ দিয়ে। এ ব্রিজ দিয়েই জেলার আটরশি, সদরপুর, পুখুরিয়া ও নওপাড়া হয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় যাতায়াত করেন স্থানীয়রা। শুধু তাই নয়, বগাইল হয়ে ভাঙ্গা-মাওয়া মহাসড়কে যাতায়াতের একমাত্র সড়কও এটি। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের উচাবাজার সংলগ্ন খালের উপর নির্মিত ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে আছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই সড়কে চলাচলকারী লাখো মানুষকে।
Advertisement
ব্রিজটির মাঝে স্লাব ভেঙে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের যেন অন্ত নেই। ব্রিজটির মাঝখানে ভেঙে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন এ সড়ক ও ব্রিজটি দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। ফলে ঝুঁকি নিয়েই চলতে হচ্ছে হালকা যানবাহনসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয়রা জানান, বড় যানবাহন চলাচল করতে না পারায় এলাকায় নির্মাণ সামগ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া অটোরিকশা, অটোভ্যান, নসিমন ও মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দুর্ভোগ লাঘবের আশ্বাস দিলেও সেতুটির মেরামতের কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
স্থানীয় শিক্ষক জগন্নাথ পাল বলেন, ব্রিজের এ অবস্থা হঠাৎ করে হয়নি। প্রায় সাত থেকে আট বছর আগে ব্রিজটির মাঝখানে হালকা ফাটল দেখা দেয়। তারপর থেকে বড় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
Advertisement
অটোভ্যান চালক আল আমিন শেখ, ব্যাবসায়ী রুস্তুম আলী, কলেজছাত্র সোহাগ মাতুব্বরসহ অনেকেই জানান, ব্রিজটি প্রায় তিন বছর ধরে মাঝখানে ভেঙে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। এখানে প্রায় প্রতিদিনই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। ব্রিজের ভাঙা গর্তে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত এর সংস্কার করা না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্কুল শিক্ষক মাহফুজুর রহমান ও আলীমুজ্জামান জানান, ব্রিজটি প্রায় আট বছর ধরে এমন অবস্থা। তবে বছর পাঁচেক আগে সামান্য সংস্কার করা হলেও তা বেশিদিন টেকেনি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তরিকুল ইসলাম তারেক বলেন, ব্রিজটি আমার ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা শহর ও পার্শ্ববর্তী তুজারপুর ইউনিয়নবাসীর যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। ভেঙে যাওয়া ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও প্রতিদিন হাজারও মানুষ বাধ্য হয়ে চলাচল করছে।
ভাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, এখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যেই একটি নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।
Advertisement
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন জানান, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় জনগণের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এটা ঠিক। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে। পুরনোটি ভেঙে এখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম হাবিবুর রহমান বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশনায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন একটি সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। শিগগির সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হবে।
এন কে বি নয়ন/কেএসআর/এমএস