ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় নির্বাচন কমিশন বিব্রত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সিইসি।
Advertisement
সিইসি বলেন, নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে সেটা ঠিক, আমরা সেটি প্রত্যক্ষ করেছি। নির্বাচনের ব্যাপারে মাঠপর্যায়ে কী ধরনের নির্দেশনা দেওয়া দরকার সেটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। আশা করি আগামী ৪ তারিখ বিস্তারিত আলোচনা করবো। অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। যেগুলো নিয়ে আমরা বিব্রত। সেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা করে মাঠপর্যায়ে দিকনির্দেশনা দেব।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের নিয়ন্ত্রণ আছে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে যদি সহনশীলতা না থাকে, তাহলে তো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। আমরা বারবার বলি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, প্রতিযোগিতামূলক হবে, কিন্তু প্রতিহিংসামূলক হবে না। আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাই, নির্বাচনে যে সহিংস ঘটনা ঘটছে, সেটা সবার প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, অভিযোগ এলেই আমরা ব্যবস্থা নেই। কিন্তু তাৎক্ষণিক কোনো ফৌজদারি ঘটনা ঘটলে, সেটা আমরা এখানে বসে কিছু করতে পারি না। এগুলো পূর্বপরিকল্পিত হয় না বা প্রশাসন তা আগে থেকেই জানতে পারে না। ফৌজদারি ঘটনাগুলো ঘটলে তা মাঠপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আমাদের কঠোর নির্দেশনা আছে।
Advertisement
রাজনৈতিক দলের ভূমিকা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমরা খুব পজিটিভলি দেখছি না। দুঃখজনক হলেও সত্যি। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় ভূমিকা থাকা দরকার। নির্বাচনের বিষয়টি শুধু নির্বাচন কমিশনের নয়, এটা সবারই। আমরা তার ব্যবস্থাপনায় থাকি শুধু। সুতরাং তারা যদি আরও প্রোঅ্যাকটিভ হয়, তাহলে এগুলো আরও কমে আসবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের একটাই মাত্র বক্তব্য সেটা হলো নির্বাচনের যে বিষয়গুলো আপনারা উল্লেখ করেছেন, যেই ধাপগুলো মূলত নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। আপনাদের মাধ্যমে তাদের কাছে আমরা সোজা মেসেজ দিতে চাই। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে পরে কিন্তু এর দায় তাদের ওপরই বর্তাবে। আমরা তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনবো।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও ভোটারের কাছে অনুরোধ করতে চাই, সেটা হলো দয়া করে উনারা যেনো একটু শান্ত থাকার চেষ্টা করেন। যাতে এ সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। যদি সহিংসতার ঘটনা না হয়, তাহলে এ রকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না। কোনো মায়ের বুক খালি হবে না। কোনো ছেলে পিতৃহারা হবে না। এ ধরনের ঘটনা অন্তত সীমিত হয়ে আসবে। এটা হচ্ছে আমাদের একমাত্র মেসেজ।
এ সময় নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব মো. হুমাযুন কবীর খোন্দকার, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর, আইডিইএ প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কাশেম মো. ফজলুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। এইচএস/এসএইচএস/জিকেএস
Advertisement