প্রায় ১৪ বছর আগে সম্পদের তথ্য গোপন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির করা আবেদনের বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৮ নভেম্বর দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
একই সঙ্গে আব্দুর রহমান বদির মামলাটি আমলে নেওয়ার আদেশের কপি এফিডেবিট আকারে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সঙ্গে সঙ্গে আসামিপক্ষকে মঞ্জুরিপত্র ও অনুমতিপত্রের (পারমিশান ও সেংশান লেটার) মধ্যে পার্থক্য কী তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
দুর্নীতির মামলায় অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে শুনানির নির্ধারিত দিনে মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
Advertisement
আদালতে আজ বদির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা জুথি ও অ্যাডভোকেট শাকিলা পারভীন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষের ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি ও মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ।
অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে করা দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ আমলে (কগনিজেন্স) নিয়েছেন আদালত। কিন্তু আসামিপক্ষ হাইকোর্টের করা আবেদনে দাবি জানিয়ে বলছেন, এই মামলায় মঞ্জুরিপত্র নেই। তার জন্য আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে চার্জ গঠনের (কগনিজেন্স) আদেশের কপি চেয়েছেন। আর ৪৫ দিনের মধ্যে কেন বিষয়টি শুনানি করতে পারেননি, সেটির কারণ হলফ আকারে জানতে বলেছেন আদালত।
এছাড়াও অভিযোগটি ২০২০ সালের ১১ অক্টোবরের আমলে নেওয়ার পরও এতদিন কেন মামলাটি শুনানির জন্য আসলো না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। বর্তমানে মামলার কী অবস্থা সেটিও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
তিনি জানান, আসামিপক্ষ বলছেন, চার্জশিট দাখিলের অনুমতিপত্র সেটা সেংশান লেটার না। মঞ্জুরিপত্র ও অনুমতিপত্রের (পারমিশান ও সেংশান লেটার) মধ্যে পার্থক্য কী তাও জানতে বলেছেন আদালত।
Advertisement
গত ১ সেপ্টেম্বর সাবেক এমপি বদির পক্ষে প্রথমে অভিযোগ গঠন বাতিলের আবেদন করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট এআর হাসানুজ্জামান। পরে সম্পূরক আবেদন করেন শামসুর রহমান।
দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর আবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ৫৬ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ গোপন ও ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর দুদক চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ দুদক আইনের ২৬/২ ও ২৭/১ ধারা অনুযায়ী বদির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর ২০১৭ সালে এ মামলার কার্যক্রম সচল হয়।
মামলায় ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তার অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন চট্টগ্রামের বিচারিক আদালত। ওই আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিভিশন করেন বদি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
এফএইচ/ইএ/এমএস