পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে নিয়মিত ভয়াবহ দাবানলের জন্য জলবায়ু পরিরবর্তনই দায়ী। মনুষ্য কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নজিরবিহীন বন পুড়ে ছাই হচ্ছে। সোমবার (১ নভেম্বর) প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
Advertisement
দাবানলের কারণে ২০০১ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে বছরে গড়ে ১৩ হাজার ৫শ বর্গ কিলোমিটার ধ্বংস হয়েছে। যা ১৯৮৪ থেকে ২০০০ সালের চেয়ে দ্বিগুণ।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসের (পিএনএএস) প্রকাশিত গবেষণার নেতৃত্বদানকারী রং ফু লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসকে বলেন, এটি আমাদের পূর্ব প্রত্যাশার চেয়ে অনেক দ্রুত ঘটেছে।
এতো অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অবনতির জন্য কোন বিষয়গুলো অবদান রেখেছে তা বোঝার জন্য ফু-এর নেতৃত্বে মার্কিন গবেষকদের একটি দল বিভিন্ন কারণ বিশ্লেষণ করেছে। ‘ভ্যাপর প্রসার ডিফিসিট’ (ভিপিডি) নিয়ে তারা কাজ করছেন। এর মধ্যমে বাতাস কতটা শুষ্ক তা নির্দেশ করে।
Advertisement
বায়ুমণ্ডলে প্রকৃতপক্ষে উপস্থিত জলের পরিমাণ এবং বায়ুমণ্ডল সর্বাধিক কী পরিমাণ ধরে রাখতে পারে তার মধ্যে পার্থক্য উপস্থাপন করে ভিপিডি। ঘাটতি যত বেশি হবে, মাটি এবং গাছপালা থেকে বাতাসে ততো বেশি জল টানা হয়। এরপর মাটি-গাছপালা শুষ্ক হয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যা ক্রমবর্ধমান আগুনের জন্য সহায়ক।
উষ্ণ মৌসুমে পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে দাবানল বাড়ার জন্য এই ঘাটতি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত বলে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন। মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে উচ্চ শুষ্ক দিনের সংখ্যা ২০০১ থেকে ২০০৮ এর চেয়ে বেড়েছে, যা আগের সময়ের তুলনায় ৯৪ শতাংশ বেশি বলে গবেষণায় বলা হয়।
ফু ও তার সহকর্মীদের গবেষণা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক বায়ুমণ্ডলীয় বৈচিত্রের কারণে শুষ্কতার পরিমাণ গড় ৩২ শতাংশ বেড়েছে। বাকি ৬৮ শতাংশ দায়ী বৈশ্বিক উষ্ণতা। যার জন্য মানুষের কর্মকাণ্ডই দায়ী।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের মতে, মানব ক্রিয়াকলাপের দ্বারা সৃষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে পৃথিবী এরই মধ্যে প্রায় ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণ হয়েছে। গত ৫০ বছরেই সবচেয়ে বেশি উষ্ণতা বেড়েছে।
Advertisement
এমএসএম/টিটিএন/এমএস