রংপুরের হারাগাছ থানা পুলিশের ‘অভিযানে’ তাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর উচ্চ আদালতের নজরে আনা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওই ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন।
Advertisement
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে বিষয়টি নজরে আনেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, ঘটনার পুরো বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে খবর নিতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা উচ্চ আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (৩ নভেম্বর) এ বিষয়ে বিস্তারিত শুনানি ও আদেশ দেওয়া হবে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত জাগো নিউজকে বলেন, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ঘটনার বিষয় আদালতে উপস্থাপন করে নজরে আনেন। তিনি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত পুলিশের নির্যাতনে তাজুল ইসলামের মৃত্যু নিয়ে একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনান। পুলিশি নির্যাতনে তাজুল ইসলামের মৃত্যু নিয়ে তিনি বলেন, এটা এতই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আপনারা দায়ীদের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত আদেশ দিতে পারেন। কারণ সংবিধানে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তারপরও কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সর্বোচ্চ আদালতকে এ ধরনের ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা হাইকোর্ট দিয়েছে।
Advertisement
অমিত দাশগুপ্ত আরও বলেন, আদালতের আদেশ মতে এরই মধ্যে রংপুর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের আদালতের আদেশের কথা জানিয়েছি। এ ঘটনার সার্বিক বিষয় তারা আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি আমি আগামীকাল আদালতে উপস্থাপন করবো।
এর আগে সোমবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রংপুরের হারাগাছ এলাকায় পুলিশের অভিযানের পর তাজুল ইসলামের মৃত্যু হয়। তিনি হারাগাছ পৌর এলাকার দালালহাট নয়াটারী গ্রামের বাসিন্দা।
‘পুলিশি নির্যাতনে’ তার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী থানা ঘেরাও করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার সন্ধ্যার পর হারাগাছের নতুন বাজার বছিবানিয়ার তেপথি মোড়ে অভিযানে যায় পুলিশ। এসময় তাজুল ইসলামকে মাদকসহ আটকের পর মারধর করা হয়। তখন ধাক্কায় দেয়ালে লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যান তাজুল। এর প্রতিবাদে থানা ঘেরাও করে এলাকাবাসী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
Advertisement
তবে হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আলী বলেন, তাজুল হেরোইন সেবন করছিলেন- এমন খবর পেয়ে সেখানে অভিযানে যায় পুলিশ। তাকে আটকের পর হ্যান্ডকাপ পরানো হলে তিনি মলত্যাগ করে ফেলেন। এ ঘটনার পর পুলিশ তাজুলকে স্থানীয়দের জিম্মায় দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে তাজুল মারা গেছেন।
এফএইচ/এইচএ/জেআইএম