করোনা পরীক্ষার ফি বাবদ খুলনা জেনারেল হাসপাতালের আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মাথায় নিয়ে আত্মগোপনকারী ওই হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাশের খোঁজ মেলেনি গত এক মাস সাত দিনেও।
Advertisement
এমনকি এ দুর্নীতি তদন্তে গঠিত স্বাস্থ্য বিভাগের কমিটি নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও প্রতিবেদন জমা দেয়নি। আরও সময় চেয়েছেন কমিটির সদস্যরা।
অপরদিকে, দুদকও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যে কারণে এখনো পুরো বিষয়টি একটিমাত্র সাধারণ ডায়েরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিদেশগামীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা খুলনা জেনারেল হাসপাতালে হয়। এখানকার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাশ নমুনা পরীক্ষার ফি গ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন। ২০২০ সালের ২ জুলাই থেকে প্রতিদিন যে পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা করতেন, তিনি তার থেকে কম সংখ্যক মানুষের নাম খাতায় লিপিবদ্ধ করতেন। বাকি টাকা প্রকাশ আত্মসাৎ করতেন। প্রকাশ যে পরিমাণ টাকা ক্যাশিয়ারের কাছে দিতেন সেই টাকা বুঝে নিয়ে ব্যাংকে জমা দিতেন তিনি। এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের সন্দেহ হলে প্রকাশের কাছে চিঠি দিয়ে এ বছরের এপ্রিল মাসে লিখিত হিসাব চাওয়া হয়। তখন বিভিন্ন তালবাহানা করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন প্রকাশ। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি তার কাছে জিজ্ঞাসা করলে হিসেবে গড়মিল রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি। গত ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি কমিটির কাছে হিসাব না দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এরপর থেকে প্রকাশ কুমারের আর কোনো খোঁজ নেই।
Advertisement
প্রকাশের স্ত্রী মাধবী লতা জানান, তার স্বামীর কোনো খোঁজ তার কাছে নেই। প্রকাশ তার সঙ্গে কোনো রাখেননি বলেও দাবি করেন তিনি।
খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. জসিম উদ্দিন হাওলাদার জানান, প্রকাশ এক মাস সাত দিন ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন। তদন্ত কমিটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য এ মাসের ১৮ তারিখ থেকে ১৫ দিনের সময় চেয়েছে। আগামী ৪ নভেম্বর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। প্রকাশ ধরা পড়লেই সবকিছু পরিষ্কারভাবে পাওয়া যেত বলে তিনি জানিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির সভাপতি স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. মঞ্জুরুল মুর্শিদ জানান, সঠিক তদন্তের জন্য আরও সময়ের প্রয়োজন। যেন সঠিক তথ্য বের হয়ে আসে। সুষ্ঠু প্রতিবেদন জমা দিতে নভেম্বর মাস সময় লাগতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে, আগামী সপ্তাহে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুদক খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাওন মিয়া।
Advertisement
আলমগীর হান্নান/এমআরআর