দেশজুড়ে

শিবগঞ্জে যুবকের হাত-পায়ের রগ কেটে নদীতে নিক্ষেপ, ২০ বাড়ি ভাঙচুর

ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বগুড়ার শিবগঞ্জের বিহার ইউনিয়ন আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রোববার (৩১ অক্টোবর) রবিউল ইসলাম নামে এক যুবকের হাত-পায়ের রগ কেটে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকার প্রার্থী ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ সময় ২০টি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ।

Advertisement

আহত রবিউল ইসলাম (২৮) নিজেও আওয়ামী লীগের কর্মী। তবে শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম রবিউলের ভাই শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি। এ কারণে রবিউল ও তার পরিবার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা মতিউর রহমানের পক্ষে এই নির্বাচনে কাজ করছিলেন।

রবিউলের ভাই বিহার ইউপি সদস্য আবু রায়হান অভিযোগ করে বলেন, এবার শুরু থেকেই নৌকার প্রার্থী মহিদুল ও তার কয়েকজন ক্যাডার গ্রামে গ্রামে তাণ্ডব শুরু করে। গত ১৭ অক্টোবর রাতে তারা বিহার হাটে অবস্থিত বিদ্রোহী প্রার্থীর মোটরসাইকেল মার্কার অফিসে হামলা চালিয়ে দুইজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে এবং হাটের দুটি দোকান ভাঙচুর করে। ওই ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের হলেও পুলিশ কোনো আসামিকেই গ্রেফতার করেনি।

তিনি বলেন, রোববার সকাল থেকে মহিদুল বাহিনী বিহার বাজারে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মারপিট শুরু করে। পরে সম্মিলিতভাবে তাদের বাধা দিলে তারা বাজার ছেড়ে বিভিন্ন পাড়ায় ঢুকে তাণ্ডব শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা আমার বাড়িতে হামলা করে। এ সময় বাড়িতে অবস্থানরত আমার ভাই রবিউলকে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হাত ও ডান পায়ের রগ কেটে দিয়ে নাগর নদীতে তাকে ফেলে দেয়। একই সময় আমাদের গ্রাম মোন্নাপাড়ার অন্তত ছয়টিসহ আশপাশের ২০টি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়।

Advertisement

রায়হান আরও বলেন, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে আমার ভাই শিমুলকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে মুমূর্ষু অবস্থায় মহিদুল ও তার সহযোগীরা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় ফেলে দেয়। সেখানেই মারা যায় শিমুল। ওই মামলায় প্রধান আসামি হলেন নৌকার প্রার্থী মহিদুল ইসলাম। এবার নির্বাচনে তার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় চেয়ারম্যানপ্রার্থী মহিদুল ইসলামের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তার পক্ষের লোকজনও এ ব্যাপারে কথা বলতে চাননি।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার পরপরই শিবগঞ্জ হাসপাতাল এলাকায় নৌকার প্রার্থী মহিদুলকে আটক করার চেষ্টা চালানো হয়। এ সময় তিনি তার মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে গেছেন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এমআরআর

Advertisement