জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন কপ-২৬ আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামীকাল। যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে বিশ্বনেতাদের উপস্থিতিতে এ সম্মেলন হচ্ছে। এবারের জলবায়ু সম্মেলন মানবতার জন্য টার্নিং পয়েন্ট বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
Advertisement
জলবায়ু বিষয়ে এবারের কপ-২৬ সম্মেলনটি সারাবিশ্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে । কারণ এখানে ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তির অগ্রগতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের পর্যালোচনা করা হবে। প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ ডিগ্রির নিচে অর্থাৎ ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে রাখার চুক্তি করেছিল। এটাকে পৃথিবীর জন্য আদর্শ তাপমাত্রা বলা হচ্ছে।
এবারের সম্মেলনে সারা বিশ্ব থেকে ১২০ জন নেতা সরাসরি অংশ নেবেন। কার্বন নির্গম কীভাবে কমানো যায় সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন তারা।
দ্রুত বৈদ্যুতিক গাড়িতে চলে যাওয়া, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ থেকে দ্রুত সরে আসা, বৃক্ষনিধন কমানো, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে বেশিসংখ্যক মানুষকে রক্ষাসহ নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে সম্মেলন থেকে।
Advertisement
জলবায়ু বিষয়ে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, এ শতাব্দীর শেষ দিকে বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ দশমিক ৭ ডিগ্রিতে পৌঁছাবে, যা লক্ষ্যমাত্রার থেকে দ্বিগুণ।
বৈশ্বিক জলবায়ুর লক্ষ্য অর্জন কতটা সম্ভব তা অনেকাংশে নির্ভর করে বিশ্বের সর্বোচ্চ কার্বন নিঃসরণকারী দেশের কর্মকাণ্ডের ওপর ৷ ২০৬০ সাল নাগাদ কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন শি জিনপিং, যা বিজ্ঞানীদের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যের চেয়ে ১০ বছর পিছিয়ে ৷ ২০২৬ সালের মধ্যে কয়লার ব্যবহার বন্ধের ঘোষণাও দিয়েছে দেশটি ৷
কার্বন নিঃসরণে চীনের পরে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ৷ ট্রাম্পের বিদায়ের পর চলতি বছর আবারও জলবায়ু আলোচনায় ফিরেছে যুক্তরাষ্ট্র ৷ প্যারিস চুক্তিতে ফেরার পাশাপাশি ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ২০০৫ সালের তুলনায় ৫০ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দেন বাইডেন ৷ কিন্তু এ সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নীতির অভাবে গ্লাসগো সম্মেলনে চীন, ভারত ও ব্রাজিলের মতো দেশগুলোকে চাপে রাখার ক্ষেত্রে বড় বাধা বলে মনে করছেন কূটনৈতিক ও এনজিওকর্মীরা।
এবারের সম্মেলন নিয়ে ভীষণ আশাবাদী আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্য ৷ এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে কয়লাকে ইতিহাসের পাতায় নিয়ে যাবেন বলে উল্লেখ করেছেন সম্মেলনের নেতা ব্রিটিশ মন্ত্রী অলোক শর্মা ৷ ২০৫০ সালের মধ্যে নিট কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে যুক্তরাজ্য ৷
Advertisement
এমএসএম/জেআইএম