জাগো জবস

স্বনির্ভর নারীর অনুপ্রেরণার নাম নামিরা

নামিরা হক বাধন সফল নারী উদ্যোক্তা। নিজের উদ্যোগকে পরিচয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ‘প্রতিটি মেয়েকেই স্বনির্ভর হতে হবে’—নামিরার এ বিশ্বাসই সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার মূলমন্ত্র।

Advertisement

নামিরার জন্ম ঢাকার মিরপুরে। তিনি মিরপুর ইসলামিয়া আদর্শ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। মাধ্যমিকের পরপরই বিয়ে হয়ে যায় তার। কম বয়সে বিয়ে হওয়ায় বেশি পড়তে পারেননি। তবে বিয়ের কিছুদিন পর উদ্যোক্তা বিষয়ক ছোট ছোট কোর্স করেন।

নামিরা ছোটবেলা থেকেই নিজের, পরিবারের এমনকি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুরু করেন নিজের ব্যবসা। ২০১৩ সালে ভারতীয় ডিজাইনের ড্রেস দিয়ে শুরু করেন নিজের উদ্যোগ। যা এখন অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।

নামিরা জানান, প্রথমে তিনি ভারতীয় ড্রেস ও জুয়েলারি নিয়ে কাজ শুরু করেন। বিশেষত গুজরাটি ড্রেসের কালেকশন নিয়ে কাজ করে ব্যাপক পরিচিতি পান। শুধু ব্যবসায়িক কাজে নয়, নিজের জ্ঞানের পরিধিকে আরও বিস্তৃত করতে নিজেও গুজরাট থেকে ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে কোর্স করেছেন একাধিকবার।

Advertisement

পোশাকের পাশাপাশি বর্তমানে গোল্ড ও ডায়মন্ড জুয়েলারি নিয়ে কাজ করছেন। হঠাৎ জুয়েলারি নিয়ে কাজ শুরু করা কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে নামিরা বলেন, ‘আমি নিজের জন্য প্রায়ই ডায়মন্ড জুয়েলারি ডিজাইন করে নিয়ে আসতাম ভারত থেকে। সেটা দেখে আমার পরিচিত অনেকেই রিকোয়েস্ট করতেন তাদের এমন ডিজাইনের কালেকশন এনে দিতে। সেই থেকে শুরু। মূলত কাস্টমারদের অনুরোধেই আমার পথচলা শুরু।’

বর্তমানে অনলাইন সেবা দিয়ে থাকলেও খুব শিগগিরই অফলাইন আউটলেট উদ্বোধন করবেন নামিরা। উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুতে বা পুরো সময়জুড়ে পরিবারকে পাশে পেয়েছন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে নামিরা বলেন, ‘আমি ভাগ্যবতী যে, আমার পরিবার সব সময় আমার পাশে ছিল। পরিবারের সাহায্য ছাড়া এতদূর আসতে পারতাম না। এমনকি ব্যবসার মূলধন পরিবার থেকেই নেওয়া। মাত্র ১৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করে এতদূর এসেছি। এখন মাসে দুই-তিন লাখ টাকা আয় হয়।’

নামিরা স্বনির্ভর হওয়ার পর সব সময় চেষ্টা করেন অসহায় ও দুস্থদের পাশে দাঁড়াতে। তার মাধ্যমে ২০-২৫ জন নারী স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ডিভোর্সি। যারা তাদের বাবা-মায়ের কাছে বোঝা হিসেবে ছিলেন। তারা এখন নামিরার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পেরেছেন।

নামিরা ব্যবসার লভ্যাংশের একটি অংশ প্রতিমাসে ব্যয় করেন বৃদ্ধাশ্রম এবং এতিমখানায়। অসহায় মানুষকে সাহায্য করে আনন্দ পান তিনি। যা তাকে এগিয়ে যেতে তাড়না জোগায়। ‘একজন সফল নারী’ পরিচয় এরই মধ্যে তৈরি করেছেন।

Advertisement

উদ্যোক্তা হতে চান এমন নারীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি পারলে আপনারাও পারবেন। একজন নারীর নিজের পায়ে দাঁড়ানো খুব জরুরি।’ শৌখিন এ উদ্যোক্তা এর পাশাপাশি ভ্লগিং করতে পছন্দ করেন। লাইফস্টাইল ভ্লগিংয়ের মাধ্যমে নারীদের উৎসাহিত করেন। এছাড়াও তিনি একজন মেকআপ আর্টিস্ট। মেকআপের ওপর একাধিক ইন্টারন্যাশনাল কোর্স করেছেন। প্রায়ই মেকআপ টিউটোরিয়াল নিয়ে হাজির হন তার পেজে।

নামিরা হক বাধন বর্তমান নারীদের কাছে অনুপ্রেরণার নাম। বিশেষত যারা উদ্যোক্তা হয়ে স্বাবলম্বী হতে চান, নামিরা সেসব নারীর পথপ্রদর্শক। তার ইচ্ছা, এ উদ্যোগ আরও সমৃদ্ধ হোক। এর জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

এসইউ/এএসএম