আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে পোস্টারে পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে বরগুনা শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহ পাড়া-মহল্লা এমন কি অলিগলিও। কোথাও কোথাও পোস্টারের কারণে দেখা যাচ্ছে না আকাশ। পোস্টার টানানোর জন্য চলছে জায়গা দখলের প্রতিযোগিতাও।কিন্তু শীতের বৈরী আচরণে বেকায়দায় পড়ছেন প্রার্থীরা। প্রার্থীদের ছবি ও প্রতীক সম্বলিত পোস্টারগুলো টানানোর পর শীতের শিশিরে সেগুলো ভিজে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও টানানোর দুই-তিনদিনের মধ্যে ছিঁড়ে মাটিতে পড়ছে। এতে এক দিকে যেমন প্রার্থীদের অর্থ নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে নতুন করে পোস্টার লাগাতে গিয়ে সময়ও নষ্ট হচ্ছে তাদের কর্মীদের।ডিসেম্বরের শুরু থেকেই দক্ষিণের এই জনপদ বরগুনায় প্রচণ্ড ঠান্ডা। এর সঙ্গে রয়েছে বাতাসও। এছাড়া নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা শুরুর পর বৃষ্টিও হয়েছে এখানে। এর ফলে টানানোর পর পোস্টারগুলো ছিঁড়ে পড়ছে। তাই বরগুনার অধিকাংশ প্রার্থী পোস্টার রক্ষার কৌশল হিসেবে ‘পলিথিন থেরাপি’ প্রয়োগ করছেন।এতে যেমন পোস্টার রক্ষা পাচ্ছে, তেমনি পোস্টারের রংও স্বাভাবিক থাকছে। এ কারণে বরগুনায় চাহিদা বেড়েছে পলিথিনেরও। তাই এখন পোস্টারের সাইজের পলিথিন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না।বরগুনা বাজারের পলিথিন ব্যবসায়ী মো. খোকন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীরা তাদের পোস্টার পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে তারপর টানাচ্ছেন। তাই এখানে পোস্টরের সাইজের সাদা পলিথিনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিক্রির জন্য তার কাছে পোস্টারের সাইজের যে সাদা পলিথিন ছিল তা কয়েকদিন আগেই শেষ হয়েছে।তিনি আরও বলেন, পলিথিনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তিনি পোস্টার সাইজের পলিথিন অর্ডার দিয়েছেন। পোস্টার লাগানোর জন্য প্যাকেট সিস্টেমের ওই সাদা পলিথিনের চাহিদা বেশি বলেও তিনি জানান।বরগুনা পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী সামছুন্নাহার নাসরীনের কর্মীরা পলিথিনের ভেতর পোস্টার ভরে তা ঝুলিয়ে দেন। সামছুন্নাহার নাসরীন বরাদ্দ পেয়েছেন কাঁচি প্রতীক। সামছুন্নাহার নাসরীন জাগো নিউজকে বলেন, শুধু শুধু পয়সা নষ্ট করে লাভ কী? কষ্ট করে হলেও একবারে পলিথিনের ভেতর পোস্টার দিয়ে লাগালে সুবিধা হয়। এতে আমার কর্মীদের সময় বাঁচছে।তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে বাজারে পোস্টারের সাইজের পলিথিন পাওয়া যেত। কিন্তু এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাজার থেকে বড় পলিথিন কিনে তার মধ্যে পোস্টার ভরে সেগুলো টানাচ্ছি।৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. রুবেল মিয়া বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর আমি যে পোস্টার টানিয়েছিলাম কয়েকদিন আগের বৃষ্টি ও শিশিরের কারণে সেই পোস্টাগুলো সব নষ্ট হয়ে গেছে। পরে নতুন করে আবার পোস্টার ছাপিয়ে তা টানাতে হয়েছে। এতে অন্যদের তুলনায় তার পোস্টারে ডাবল খরচ হয়েছে বলেও জানান তিনি। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম নান্না জাগো নিউজকে বলেন, প্রার্থীদের পোস্টার টানানোর পর বরগুনায় বৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেক প্রার্থীর পোস্টার নষ্ট হয়েছে। শুরু থেকেই তিনি পলিথিনের ভিতরে পোস্টার ভরে তারপর তা টানিয়েছি। তাই বৃষ্টিতেও তার পোস্টার নষ্ট হয়নি বলেও জানান তিনি।১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার রিয়াজ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, পলিথিনের ভিতরে পোস্টার ভরে তারপর সেগুলো টানানো তো একটা ভালো বুদ্ধি। একবার পলিথিনের ভিতরে পোস্টার ভরে সেগুলো টানালে ভোটের দিন পর্যন্ত নতুন করে আর পোস্টার লাগানোর প্রয়োজন পড়েনা।সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এসএস/পিআর
Advertisement