শিক্ষা

ঢাকা মহানগরের ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাবে করোনার টিকা

# সময় শেষ হলেও কোনো বিভাগেরই তথ্য আসেনি# তথ্য সংগ্রহে গুরুত্ব নেই সংশ্লিষ্টদের# ১ নভেম্বর থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু# ঢাকার ১২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হবে টিকাকেন্দ্র

Advertisement

১ নভেম্বর থেকে ঢাকা মহানগরের শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম শুরুর কথা থাকলেও এ পর্যন্ত ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর তালিকা মিলেছে। গত ১৯ অক্টোবর তালিকা পাঠানোর সময় শেষ হওয়ায় নতুন করে আর নেওয়া হচ্ছে না তালিকা। ২৭ অক্টোবর সারাদেশের শিক্ষার্থীদের তথ্য পাঠানোর সময় শেষ থাকলেও এ পর্যন্ত একটি বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরও তথ্য পাঠানো হয়নি। কবে আসবে তাও জানেন না সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১ নভেম্বর থেকে স্কুল-কলেজপড়ুয়া ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। প্রথম ধাপে ঢাকা মহানগরের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু হবে। দেশের সব জেলার এ বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হবে পরবর্তী সময়ে। স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আইসিটি বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

জানা যায়, ১২ থেকে ১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কাছে তথ্য চায় স্বাস্থ্য বিভাগ। ঢাকা মহানগর ও সারাদেশের এ স্তরের শিক্ষার্থীদের তথ্য পাঠাতে মাউশি আলাদাভাবে দুটি নির্দেশনা জারি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য পাঠাতে নির্দেশ দেয়। গত ১৯ অক্টোবর ঢাকা মহানগর ও ২৭ অক্টোবর সারাদেশের স্কুল-কলেজ থেকে তথ্য পাঠানোর সময় শেষ হয়।

Advertisement

মাউশির ইএমআইএস সেলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা মহানগরে ১২ থেকে ১৭ বছরের প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। এ পর্যন্ত তথ্য এসেছে তিন লাখ ৬৫ হাজার শিক্ষার্থীর (৭৩ শতাংশ)। এর মধ্যে তিন লাখ ৪১ হাজার জনের তালিকা বুধবার (২৭ অক্টোবর) আইসিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) পাঠানো হয়েছে ২৪ হাজার শিক্ষার্থীর তথ্য। রাত থেকে টিকার জন্য নিবন্ধন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বুধবার সারাদেশের সব জেলার শিক্ষার্থীদের তথ্য পাঠানোর কথা থাকলেও এ পর্যন্ত একটি বিভাগ থেকেও তথ্য পাঠানো হয়নি বলে জানিয়েছেন মাউশির সহকারী পরিচালক (বেসরকারি বিদ্যালয়) দূর্গা রানী। সারাদেশে ১২ থেকে ১৭ বছরের ১ কোটি ২০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে।

দূর্গা রানী জাগো নিউজকে বলেন, বুধবার সারাদেশের শিক্ষার্থীদের টিকার নিবন্ধনের জন্য শেষ সময় হলেও এখনো কেউ তথ্য পাঠায়নি। তথ্য পাঠাতে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।

তবে অনেক জরুরি কাজ থাকায় টিকার বিষয়টি তারা তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

Advertisement

জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির জাগো নিউজকে বলেন, এ পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থীর তথ্য পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার থেকে টিকার জন্য জন্মনিবন্ধন নম্বর দিয়ে সুরক্ষা অ্যাপসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন কাজ শুরু করা হবে। টিকা দেওয়া হবে ১ নভেম্বর থেকে।

‘ঢাকায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে ১২টি। সেখানে স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। কেন্দ্রের পরিবেশ ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্কাউট সদস্যদের।’

ঢাকার ২৭ শতাংশ শিক্ষার্থী টিকার বাইরে থাকছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা তথ্য পাঠিয়েছে তাদের মধ্যে কারও তথ্য ভুল থাকলে আপাতত সে টিকার আওতায় আসবে না। বাদপড়া ও ভুল তথ্য দেওয়া শিক্ষার্থীদের আবারও তথ্য দিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্দেশ দেওয়া হবে। তাদের টিকার আওতায় আনা হবে সেসব তথ্যের ভিত্তিতে।

এদিকে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, ১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার জন্য তালিকা শেষের দিকে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের তালিকা দিয়েছে, সে তালিকা আমরা আইসিটি মন্ত্রণালয়কে দিয়েছি।

‘স্কুলশিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। প্রথমে ঢাকায় ১২টি কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৪০ হাজার জনকে টিকা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেন্দ্র যেন আরও বাড়ানো হয়। আমরা সেদিকে নজর দেবো। সারাদেশেই আমরা স্কুলের ছেলে-মেয়েদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’

ঢাকার বাইরে স্কুলশিক্ষার্থীদের কবে থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু করা হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ঢাকার বাইরে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে একটু সময় লাগবে। আমরা তো সবকিছু করতে পারি না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তালিকা তৈরি করছে। সে তালিকা আবার আইসিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

নিবন্ধনের বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক বেলাল হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে শিক্ষার্থীদের টিকার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছে। সেখানে এ সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা থাকবে।

তিনি আরও বলেন, অনলাইনে সুরক্ষা অ্যাপসে প্রবেশ করে তথ্য পূরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ও কেন্দ্র নির্বাচন করতে হবে। যারা রেজিস্ট্রেশন করবে তাদের মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে টিকাকেন্দ্র ও সময় জানিয়ে দেওয়া হবে।

এমএইচএম/এএ/জেআইএম