দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেকে মোটরবাইক রাইড শেয়ারিং ব্যবহার করেন। পরিষেবাটি নিয়ে চালক ও যাত্রীদের রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। চালকরা বলছেন, রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো তাদের ঠকানোয় বাধ্য হয়ে তারা চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহন করছেন। তেমনি যাত্রীরাও চালকদের কাছ থেকে হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ করছেন।
Advertisement
এমন বাস্তবতায় বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) জানিয়েছে, অ্যাপসে রাইড শেয়ারিং না করে চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহন করলে সংশ্লিষ্ট চালক ও যাত্রীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টিকে সাধুবাদ জানালেও রাইড শেয়ারিং সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চালকরা কেন চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহন করেন তা অনুধাবন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
ঢাকা রাইড-শেয়ারিং ড্রাইভারস্ ইউনিয়নের (ডিআরডিইউ) সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, অ্যাপবিহীন গাড়ি চালানোর বিষয়ে বিআরটিএ’র সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু অ্যাপগুলো আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষদের জিম্মি করেছে। অ্যাপে যে ফেয়ার ক্যালকুলেশন করে সেটা স্বচ্ছ নয়। অধিকাংশ ট্রিপেই চালকদের কম টাকা দেওয়া হয়।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মনে করেন যাত্রী নিয়ে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে কোথাও গেলাম। গাড়ি অনুযায়ী সেটার বেইজ ফেয়ার হবে ৫০ টাকা। প্রতি কিলোমিটার ভাড়া হবে ২০ টাকা। অর্থাৎ আট কিলোমিটারে ১৬০ টাকা। প্রতি মিনিট ওয়েটিং চার্জ ৩ টাকা। ধরি, সেখানে যেতে আমার ৩০ মিনিট জ্যামে কেটেছে। তাহলে ভাড়া হওয়ার কথা ৫০+১৬০+৯০ অর্থাৎ ৩০০ টাকার মতো। কিন্তু সেখানে আমার ভাড়া আসে ২০০ টাকা বা ১৮০ টাকা।
Advertisement
বেলাল আহমেদ আরও বলেন, তখন আমরা অ্যাপে অভিযোগ করি। কিন্তু প্রতিকার পাই না। আমরা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। ২৫ শতাংশ কমিশন দিয়ে ঢাকার মতো যানজটের শহরে রাইড শেয়ার করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৫ শতাংশ কমিশন দিয়ে রাইড শেয়ার করে কেউই তিন বেলা খাবার জোগাড় করতে পারবে না। এর প্রভাবে আমরা দেখছি পুলিশি মামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে চালকরা তাদের মোটরবাইক পুড়িয়ে দিচ্ছেন। আমরা বলেছি, কমিশন ১০ শতাংশ করতে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করেন এই নেতা। তিনি বলেন, এগুলো সম্পূর্ণরূপে আত্মঘাতী ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমরা এগুলো সমর্থন করি না। তারা এগুলো কেন করছে, এটা যাচাই করা প্রয়োজন। মামলা সবসময়ই হয়। ব্যক্তিগত গাড়িতেও পুলিশ মামলা দেয়। তবে অনেকেই ক্ষমতা দেখিয়ে মামলা থেকে পার পেয়ে যান। কিন্তু যারা রাইড শেয়ার করেন তারা ক্ষমতাহীন। এখানে শক্তিশালী কোনো ইউনিয়ন গড়ে ওঠেনি।
পার্কিং সংক্রান্ত মামলা পুলিশ বেশি দেয় জানিয়ে ডিআরডিইউ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নিজের ঘর ছাড়া রাইট পার্কিং কোনটা। এটা কেউ তো বলতে পারবে না। কিন্তু কোথাও গাড়ি দাঁড়ানো দেখলেই পুলিশ রং পার্কিং বলে মামলা দিচ্ছে। যেখানে দাঁড়ালে কোনো সমস্যা হবে না, এমন কিছু পয়েন্ট আমাদের নির্ধারণ করে দিক। তাহলে বিষয়টা মিটে যায়। কিন্তু সেটা তো করা হচ্ছে না। আমাদের ন্যূনতম কিছু পার্কিং দেওয়া উচিত।
এসএম/কেএসআর/জিকেএস
Advertisement