আইন-আদালত

বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে নির্যাতন: ওসি-এসআই-এএসআইকে বরখাস্তের নির্দেশ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে নিজ ঘরে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশীদ, উপ-পরিদর্শক হাবিবুর রহমান (এসআই) ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মফিজুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

Advertisement

এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো.কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন।

আজ শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, অনীক আর হক ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

হাইকোর্টের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী। তিনি বলেন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে অবমাননার ঘটনায় সেই সময়ের ওসি ও এএসআইকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া ওই ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ ও ইউপি সদস্যকে বহিষ্কার ও ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন আদালত।

Advertisement

নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী জানান, সেসময়ের ওসি, এসআই ও এএসআইকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ ও চৌকিদার আলী আসগর সাসপেন্ড করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে এলজিআরডি সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ৫ অক্টোবর ঘটনাটি আদালতের নজরে আনার পর অনলাইন থেকে ফুটেজটি সরাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সিডি বা পেনড্রাইভে কপি রেখে ভিডিও ফুটেজ সরাতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া ওই নারীর পরিবারকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের বক্তব্য নেওয়ায় পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কি না তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন আদালত। কমিটিকে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

আদালতের নির্দেশে কমিটির প্রধান ছিলেন চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো.আবুল বাশার। সদস্য ছিলেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসরাত সাদমীন ও জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী।

Advertisement

ওই কমিটি আদালতে প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদনে অবহেলা পাওয়ায় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় চৌকিদারের বিষয়ে আদালত যৌক্তিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তদন্ত কমিটি। এরপর এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দেন হাইকোর্ট।

এফএইচ/এআরএ/জেআইএম/জিকেএস